দেশের প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, তিস্তা অববাহিকার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে পানি বিপত্সীমা অতিক্রম করতে পারে। রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুর ও চাঁদপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। নীলফামারীতে তিস্তার অব্যাহত ঢলে জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী ও গয়াবাড়ী ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রামের পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। ফরিদপুরে সদর উপজেলার চরাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। এর ফলে জেলার মধুমতী, আড়িয়াল খাঁ ও কুমার নদে পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকছে। পাঁচ উপজেলার কয়েকটি স্থানে নদীভাঙন তীব্র হয়েছে।
প্রতিবছরই বন্যায় সারা দেশ কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে যায়। রাস্তাঘাটের ক্ষতি হয়। ফসল নষ্ট হয়। পুকুরের মাছ ভেসে যায়। মানুষকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু স্থানে খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করতে হয়। বন্যার পানিতে ডুবে, সাপের কামড়ে ও পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
কমবেশি এমন ক্ষতি প্রায় প্রতিবছরই হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত বন্যার ভয়াবহতা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নদীগুলোকে নাব্য করা না গেলে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি ক্রমান্বয়ে বাড়তেই থাকবে। এর কারণ, আমাদের নদীগুলো ভরাট হয়ে যাওয়া এবং বর্ষায় উজান থেকে নেমে আসা পানি নদী দিয়ে নামতে না পেরে দুই কূল প্লাবিত হওয়া।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বর্ষায় বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যত পানি বঙ্গোপসাগরে যায়, তার ৯৫ শতাংশই আসে উজান থেকে। সেই পানি আটকানোর কোনো উপায় নেই। তাই বন্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার একটিই উপায় আছে, তা হলো খননের মাধ্যমে নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা।
আপাতত দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ তৎপরতা শুরুর প্রস্তুতি নিতে হবে।