English

23 C
Dhaka
বুধবার, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
- Advertisement -

প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে: রাজবাড়ীতে কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরি

- Advertisements -
বিশ্বে বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। দেশে প্রতিবছর যত মানুষ রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায় তার প্রায় এক-চতুর্থাংশই মারা যায় দূষিত বায়ুর কারণে। বায়ুদূষণের কারণে শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি হৃদরোগ, ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগের প্রকোপও বাড়ছে। বাংলাদেশের বায়ুদূষণের জন্য প্রধানত দায়ী ইটভাটা।
বায়ুদূষণের জন্য দায়ী কালো ধোঁয়ার ৩৮ শতাংশই নির্গমন হয় ইটভাটা থেকে। তার পরও প্রতিনিয়ত বাড়ছে ইটভাটার সংখ্যা। শুধু ধোঁয়া নির্গমণই নয়, আরো অনেকভাবেই ইটভাটা পরিবেশের ক্ষতি করছে। ভাটায় কাঠ পোড়ানো নিষিদ্ধ হলেও অধিকাংশ ভাটায়ই কাঠ পোড়ানো হয়।
উজাড় হচ্ছে বৃক্ষসম্পদ। মাঠ থেকে টপ সয়েল বা ওপরের মাটি কেটে আনায় জমি উর্বরা শক্তি হারাচ্ছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় প্রায় সব ইটভাটায় অবাধে বনের কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। কাঠ পোড়ানো বন্ধে বা সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের অবহেলা বেদনাদায়ক।
জানা যায়, কয়লা দিয়ে ইট পোড়ালে খরচ কিছুটা বেশি পড়ে। তাই অধিক মুনাফার জন্য ভাটা মালিকরা ভাটায় কিছু কয়লা সাজিয়ে রাখেন। কিন্তু ইট পোড়ান কাঠ দিয়েই। রাজবাড়ীর ভাটাগুলোতে প্রকাশ্যেই কাঠের বড় বড় স্তূপ দেখা যায়। কোনো কোনো ভাটার মালিক স্বীকারই করেছেন, তাঁদের ভাটার সিস্টেমই কাঠের, কয়লার নয়।
কিন্তু আইনে তো ভাটায় কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাহলে এ ধরনের ভাটা পরিচালনার অনুমতি পায় কিভাবে? সমস্যাটা এখানেই। ইটভাটা নিয়ে বহু রকমের খেলা হয়। আইনে বলা আছে, সংরক্ষিত বনাঞ্চল বা লোকালয় থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে ইটভাটা করতে হবে। বাস্তবে তা মানা হয় না। কোনো আইনেই অনুমতিহীন বা অবৈধ ইটভাটা চালানো যায় না। বাস্তবে বৈধ ভাটার চেয়ে সাত-আট গুণ বেশি অবৈধ ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে। এগুলোতে যে ড্রাম চিমনি ব্যবহার করা হয় সেগুলো অনেক বেশি ক্ষতিকর।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেগুলো দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। উচ্চ আদালত একাধিকবার অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সে নির্দেশও যযাযথভাবে মানা হয় না। পরিবেশ অধিদপ্তর কিংবা স্থানীয় প্রশাসন মাঝেমধ্যে লোক-দেখানো অভিযান চালায়। ভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কয়েক দিন পর বিশেষ যোগাযোগে সেই ভাটাগুলো আবার চালু হয়ে যায়। রাজবাড়ীর একজন ভাটা মালিক স্বীকারও করেছেন, তাঁরা পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করেই ভাটা চালাচ্ছেন কিংবা ভাটায় কাঠ পোড়াচ্ছেন। এই সমন্বয়ের বিষয়টি কারো অবোধগম্য হওয়ার কথা নয়।
আমরা চাই দেশে ইটভাটাসংক্রান্ত আইন ও নীতিমালা কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হোক। ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হোক।
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন