English

24 C
Dhaka
রবিবার, জানুয়ারি ১২, ২০২৫
- Advertisement -

প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন: অস্ত্রোপচারে অনিয়ম ও মৃত্যু

- Advertisements -
দেশে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের অভাব নেই। তেমনি অভাব নেই প্যাথলজিক্যাল ল্যাব ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের। এর মধ্যে অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান যেমন আছে, তেমনি আছে অনুমোদনহীন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। এগুলোর সেবার মান নিয়ে রয়েছে বিস্তর প্রশ্ন।
গণমাধ্যমে এসব নিয়ে প্রতিনিয়ত খবর থাকছে। প্রায় কোথাও সেবার মানসিকতা নেই, উপযুক্ত চিকিৎসক নেই, প্রশিক্ষিত নার্স বা টেকনিশিয়ান নেই। আছে কেবলই ‘পকেট কাটা’ বাণিজ্য, যার ফলে প্রায়ই ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে দুটি শিশুর মৃত্যুর খবরে দেশের মানুষ রীতিমতো স্তম্ভিত হয়েছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু হয় পাঁচ বছরের শিশু আয়ানের। জানা যায়, পূর্ণ অজ্ঞান করার পর তার আর জ্ঞান ফেরেনি। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড মেডিক্যাল চেকআপ সেন্টারে খতনা করাতে এসে মৃত্যু হয় ১০ বছরের শিশু আহনাফ তাহমিদের।
অ্যানেসথেসিয়া করার অনুমোদন না থাকলেও এখানে শিশুটিকে অজ্ঞান করার পর আর জ্ঞান ফেরেনি।
জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া বা পূর্ণ অজ্ঞান করার প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ জন্য সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত অ্যানেসথেসিওলজিস্ট বা অবেদনবিদের প্রয়োজন হয়।রোগীকে অজ্ঞান করার আগে তার ফিটনেস যাচাই এবং ঝুঁকি পরিমাপ করতে হয়। অজ্ঞান করার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে রোগীকে অভুক্ত রাখা জরুরি। এ ছাড়া রোগীর হার্ট, ফুসফুস, লিভারের সমস্যা থাকলেও পুরো অজ্ঞান করাটা ঝুঁকিপূর্ণ।
সব কিছু বিবেচনা করে একজন অবেদনবিদ সিদ্ধান্ত নেন রোগীকে পুরো অজ্ঞান করা যাবে কি না, অথবা আংশিক অজ্ঞান করে কাজ চালানো যাবে কি না, কিংবা ঝুঁকি বিবেচনায় কী কী ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। অভিযোগ আছে, প্রায়ই দেশের অনেক হাসপাতাল ও ক্লিনিকে এসব প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অবলম্বন করা হয় না এবং অনেক দুঃখজনক ঘটনা ঘটে।
এমন পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মনে করিয়ে দিয়েছে যে যথাযথ অনুমোদন ছাড়া কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বার বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার বিধান নেই।
হাসপাতাল, ক্লিনিক ও চিকিৎসা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে আরো অনেক ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি সেসবের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এক হাজার দুই শর বেশি অবৈধ ক্লিনিক বন্ধ করা হয়েছে এবং এই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সম্প্রতি দুই শিশুর মৃত্যুর পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যেকোনো ধরনের অস্ত্রোপচারের জন্য ১০ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে আছে বেসরকারি ক্লিনিক/হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্সের কপি প্রতিষ্ঠানের মূল প্রবেশপথের সামনে দৃশ্যমান স্থানে স্থায়ীভাবে প্রদর্শন করা, যথাযথ লাইসেন্স ছাড়া কোনোভাবেই এই সেবা না দেওয়া, ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রে যে ক্যাটাগরিতে লাইসেন্স রয়েছে, শুধু সেই ক্যাটাগরিতে নির্ধারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা, নিবন্ধিত/লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে অপারেশন থিয়েটারে অবশ্যই ‘অস্ত্রোপচারকক্ষের আচরণবিধি’ মেনে চলা ইত্যাদি।
হাসপাতাল, ক্লিনিক বা চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যেহেতু মানুষের জীবনের প্রশ্ন জড়িত, তাই এগুলোতে কোনো ধরনের অনিয়ম কাঙ্ক্ষিত নয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে ১০ দফা নির্দেশনা দিয়েছে, সেগুলো যাতে যথাযথভাবে পালিত হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন