সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ, অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগা বা দুর্বল স্বাস্থ্যের মানুষের। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিটি মাসেই রাজধানীর বায়ুদূষণ রেকর্ড গড়েছে। এ সময় বায়ুদূষণ ছিল ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বায়ুদূষণ নিয়ে কাজ করা বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) ঢাকার আমেরিকান দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত ২০১৬ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরের বায়ুমান সূচকের (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স-একিউআই) উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বায়ুদূষণের একটি চিত্র তুলে ধরেছে।
অন্যদিকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের বায়ুমান সূচক আগের আট বছরের ডিসেম্বর মাসের গড়মানের তুলনায় ৩১.০৯ শতাংশ বেশি ছিল। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বায়ুমান সূচক ২৬.৪৫ শতাংশ বেড়েছে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যে অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। বায়ুদূষণজনিত কারণে বছরে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। বায়ুদূষণের ফলে সর্বাগ্রে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শ্বাসনালি ও ফুসফুস।
অ্যালার্জি, অ্যাজমা, হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, শ্বাসনালির সংক্রমণসহ শ্বাসতন্ত্রের নানা ধরনের রোগ হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে তা আরো অনেক রোগের কারণ হয়। বায়ুদূষণের কারণে ক্যান্সার, হৃদরোগের মতো প্রাণঘাতী রোগেরও বিস্তার ঘটছে। তার পরও বায়ুদূষণ রোধে আমাদের উদ্যোগ নেই বললেই চলে।
বাংলাদেশে বায়ুদূষণের একটি প্রধান কারণ যত্রতত্র গড়ে ওঠা ইটভাটা। এগুলোর বেশির ভাগই অবৈধ এবং এগুলোতে ভাটা স্থাপনসংক্রান্ত আইন-কানুন প্রায় কিছুই মানা হয় না।
পুরনো ও ফিটনেসহীন যানবাহনের ছড়াছড়ি। এগুলোর দূষণের মাত্রা অনেক বেশি। কারখানার বায়ুদূষণও কম নয়। স্থাপনা নির্মাণে স্বাস্থ্যসম্মত নির্মাণ বিধিমালা মানা হচ্ছে না। বিভিন্ন সেবা সংস্থার খোঁড়াখুঁড়ি লেগেই থাকে। ভাঙাচোরা রাস্তায় যানবাহন চলায় ধুলা বেশি ছড়ায়। আমরা আশা করি, জনস্বাস্থ্যের অন্যতম হুমকি বায়ুদূষণ কমাতে সরকার দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।