গত বছরের মতো চলতি বছরও করোনায় কর্মহীন ও আয়-উপার্জনহীন হয়ে পড়া মানুষ পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার। শুরুতেই ১৭ লাখ পরিবারের কাছে অর্থ পৌঁছে গেছে। করোনা মহামারির কারণে সারা দেশে বহুসংখ্যক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আয়-রোজগার অনেক কমে গেছে এমন দিনমজুর বা সাধারণ খেটে খাওয়া প্রান্তিক মানুষের দুই কোটি মানুষকে অর্থ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতি পরিবারে সদস্য চারজন করে ধরে ৫০ লাখ পরিবারকে এই অর্থ সহায়তায় আনার জন্য তালিকা তৈরি হয়েছিল। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য পাঁচটি প্যাকেজে তিন হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেন। পাঁচ প্যাকেজের প্রথমটি ছিল দুই হাজার ৫০০ টাকা করে নিম্ন আয়ের মানুষকে নগদ সহায়তা। মোট ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৪৭০ জন দিনমজুর, পরিবহন শ্রমিক, নৌপরিবহন শ্রমিক ও ক্ষুদ্র্র ব্যবসায়ীকে সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়। এতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় সার্বিক যাচাই-বাছাই শেষে বৃহস্পতিবারই ১৭ লাখ ২০ হাজার ২১৪ জন শ্রমিক ও ক্ষুদ্র্র ব্যবসায়ীর কাছে সহায়তার টাকা পৌঁছে দিয়েছে। অর্থাৎ বাদ পড়েছে চার হাজার ২৫৬ জন। যাঁরা টাকা পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে দিনমজুর ১৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩৮৯ জন, পরিবহন শ্রমিক দুই লাখ ৩০ হাজার ৪৩২ জন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ৫০ হাজার ৪৪৫ জন ও নৌপরিবহন শ্রমিক এক হাজার ৯৪৮ জন।
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী ১৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩৮৯ জন দিনমজুর দুই হাজার ৫০০ টাকা করে পেয়েছেন। এতে সরকারের ব্যয় হয়েছে ৩৬১ কোটি ৪৩ লাখ ২০ হাজার ২৯৫ টাকা। এর মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ১৩ কোটি ৮৯ লাখ ৮৫৩ জনকে দুই হাজার ৫১৫ টাকা করে ৩৪৯ কোটি ৫৪ লাখ ৮০ হাজার ২৯৫ টাকা পাঠানো হয়েছে। আর ৪৭ হাজার ৫৩৬ জন দিনমজুরকে দুই হাজার ৫০০ টাকা করে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১১ কোটি ৮৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে সরকারের ব্যয় হয়েছে ৪৩২ কোটি ৫৫ লাখ চার হাজার ৩৯০ টাকা। এই টাকা চলতি অর্থবছরের বাজেট থেকে দেওয়া হয়েছে।
দেশে উন্নয়নের যে ধারা সূচিত হয়েছিল করোনা মহামারি তাতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। গত বছর সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা ও কিছু নীতি সহায়তা উদ্যোক্তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল। কিন্তু করোনার নতুন ঢেউয়ে আবার বিপর্যয়ের মুখে চলে এসেছে কলকারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্য। এ অবস্থায় কল্যাণময়ী প্রধানমন্ত্রীর এই ঈদ উপহার দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। জনকল্যাণের এই ধারা অব্যাহত থাক।