করোনা মহামারির পর এ বছর ডেঙ্গু আমাদের খুব ভুগিয়েছে। কিন্তু আমরা কি জানি, আমাদের চারপাশে আরো কত ভয়ংকর শত্রু মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে? প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দেশে এক বছরে এইচআইভি শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এক হাজার ২৭৬।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, দেশে এইচআইভি/এইডসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর এই সংখ্যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এইচআইভি নামক ভাইরাসটির সংক্রমণ এভাবে বাড়লেও এটি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে গৃহীত ব্যবস্থা ও সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
জানা যায়, দেশে প্রথম এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৮৯ সালে। তার পর থেকে প্রতিবছর শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, দেশে এ পর্যন্ত এইচআইভি পজিটিভ বা ভাইরাস সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ১৫ হাজার ১৪৩। আর এইডস রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ৯৮৪।তাদের মধ্যে মারা গেছে দুই হাজার ৮৬ জন। গত এক বছরে যারা এইচআইভি পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৫৮ জন রোহিঙ্গা এবং এক হাজার ১১৮ জন দেশের নাগরিক। শনাক্তদের মধ্যে ৮৫০ জন পুরুষ, ২৮৭ জন নারী এবং ৯ জন তৃতীয় লিঙ্গের।বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে এইচআইভি/এইডস ব্যবস্থাপনায় সুযোগ-সুবিধা আরো বাড়ানো দরকার।এই ভাইরাসে সংক্রমিতদের শনাক্ত করার জন্য দেশব্যাপী উদ্যোগ আরো বাড়াতে হবে। কারণ আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত না হলে তার মাধ্যমে অন্যদের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। এইডস সম্পর্কে মানুষের অনেক ভুল ধারণাও রয়েছে।অনেকেই মনে করে, এইডস খুব ছোঁয়াচে। ফলে এইডসে আক্রান্ত ব্যাক্তিকে মানুষ এড়িয়ে চলে।তার সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখা হয় না। এর ফলে কেউ এই ভাইরাসে সংক্রমিত হলে ভয় পেয়ে যায় এবং সংক্রমণ গোপন করার চেষ্টা করে। এতেও সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি থেকে যায়।অথচ বাস্তবে তেমনটি ঘটে না। সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে করমর্দন করলে কিংবা তার থালা-বাসন, গ্লাস ইত্যাদি অন্য কেউ ব্যবহার করলে সংক্রমণ ছড়ায় না।বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এইচআইভি সংক্রমণ ঠেকাতে শনাক্তকরণ প্রচেষ্টা বাড়ানোর পাশাপাশি আক্রান্তদের চিকিৎসায় আরো বেশি উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এইডস চিকিৎসায় নিবেদিত হাসপাতাল প্রয়োজন। একই সঙ্গে জনসচেতনতা বৃদ্ধিরও উদ্যোগ নিতে হবে।