English

26 C
Dhaka
সোমবার, জানুয়ারি ১৩, ২০২৫
- Advertisement -

পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক করুন: বংশাই নদীতে বাঁধ দিয়ে রাস্তা

- Advertisements -

নদী রক্ষায় দেশে অনেক আইন রয়েছে। উচ্চ আদালত থেকে অনেক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে হাইকোর্ট রাজধানী ঢাকার পাশে থাকা তুরাগ নদকে ব্যক্তি-আইনি সত্তা বা জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করেছেন। রায়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সব নদ-নদী একই মর্যাদা পাবে।

কিন্তু বাস্তবতা বলে, প্রভাবশালীরা এসব আইন, নির্দেশনা—কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করে না। যে যেভাবে পারছে নদীর জায়গা দখল করে স্থাপনা বানাচ্ছে, নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছের ঘের বানাচ্ছে, বাঁধ দিয়ে নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইটভাটার মালপত্র পরিবহন বা অন্য কোনো কারণে রাস্তা বানাচ্ছে। প্রশাসন এসব দেখেও না দেখার ভান করে। ফলে দখলকারীরা আরো বেপরোয়া হয়।

প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বংশাই নদীতে বাঁধ দিয়ে ইটভাটায় যাতায়াতের জন্য রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে নদীর পানিপ্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদিকে শুষ্ক মৌসুমে বহু কৃষক সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে বর্ষায় জলাবদ্ধতাসহ মানুষ নানাভাবে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

প্রকাশিত খবরের সঙ্গে থাকা ছবিতেও দেখা যায়, মধ্যখানে সরু একটি সিমেন্টের রিং (চুঙ্গি) বা পাইপ রেখে নদীর বুকে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে রাস্তা বানানো হয়েছে। সরু পাইপে খুব কমই পানি প্রবাহিত হতে পারে।
এতে বাঁধের একদিকে পানির অভাব হচ্ছে। সেচের মাধ্যমে নদীর পানি চাষাবাদে ব্যবহার করতে পারছেন না কৃষকরা। স্থানীয় এমবি-১ ও এমবি-২ ইটভাটার মালিক খোরশেদ আলম ইট, মাটিসহ অন্যান্য মালপত্র পরিবহনের জন্য এক বছর আগে এই রাস্তাটি নির্মাণ করেছেন।

অথচ প্রশাসন আজ পর্যন্ত নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শুধু খোরশেদ আলম নন, বংশাই নদীর ওপর আরো অনেক প্রভাবশালীর অবৈধ হস্তক্ষেপ হয়েছে।

ফলে একসময় যে নদী দিয়ে বড় বড় নৌকা চলাচল করত, তা এখন সরু খালে পরিণত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে শিগগিরই নদীটি অস্তিত্ব হারাবে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় লোকজন।

স্থানীয় প্রশাসন যদি নদী রক্ষায় এমন উদাসীন থাকে, তাহলে এত আইন, উচ্চ আদালতের এত নির্দেশনা কোনো কাজে আসবে? কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি বলেছেন, নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের প্রশ্ন, এক বছরেও কেন তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হলো না।

নদীর ওপর বাঁধ দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রশাসন থেকে অনুমতি দেওয়ার কথা নয়। তাই ধরেই নেওয়া যায়, অনুমতি ছাড়াই রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা আশা করি, এই অবৈধ কাজের জন্য রাস্তা নির্মাণকারীর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করাসহ দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন