স্কুলে প্রতিবছর ভর্তি ফরম বিতরণ শুরু হয় নভেম্বর মাসে। ডিসেম্বরে হয় লটারি ও ভর্তি পরীক্ষা। এ বছর করোনার কারণে পরিস্থিতি ভিন্ন। গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কত দিন বন্ধ থাকবে, তা স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এবার স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা হবে কি? এ প্রশ্ন অভিভাবকদের।
সরকার এরই মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি), জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করেছে। স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী বললেন, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এবার বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়েই মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ওপরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হবে। গতকাল বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কোনো পরীক্ষা নয়, এবারের যে পরিস্থিতি, কোনো পরীক্ষা নয়। এবার কোনো বার্ষিক পরীক্ষা হচ্ছে না।’ তবে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ঘাটতি পূরণের জন্য ৩০ কর্মদিবসে শেষ করা যায় এমন একটি পাঠক্রম তৈরি করছে এনসিটিবি। এই পাঠক্রমের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে একটি করে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। সেই অ্যাসাইনমেন্টের মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের ঘাটতি চিহ্নিত করে পরবর্তী ক্লাসে তা পূরণ করার চেষ্টা করা হবে।
অবশ্য শিক্ষার্থীদের পরের ক্লাসে ওঠার ক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্টের মূল্যায়নের কোনো প্রভাব যে থাকবে না, তা স্পষ্ট করে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, এই মূল্যায়নের মাধ্যমে যেন কোনো চাপ সৃষ্টি করা না হয়। এ মূল্যায়ন শুধু বোঝার জন্য যে শিক্ষার্থীদের কোথায় কোথায় দুর্বলতা আছে। দুর্বলতাগুলো পরের ক্লাসে কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা করা হবে। নভেম্বরেও যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে না, সেই আভাসও দিয়েছেন মন্ত্রী। বলেছেন, যখন মনে হবে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই বা খুবই সামান্য ঝুঁকি আছে, ঝুঁকিটুকু নেওয়া সম্ভব, তখন খোলা হতে পারে। তবে সেটি কবে হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন তিনি। আগামী জানুয়ারিতে স্কুল খোলা সম্ভব না হলেও সময়মতো শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানো ও শিক্ষাবর্ষ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।
করোনার কারণে এ বছর প্রায় সব কিছু ওলটপালট হয়ে গেছে। এ কারণেই মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ওপরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করার। পরিস্থিতির সাপেক্ষে এ সিদ্ধান্ত মন্দ নয়। আমরা আশা করব, পরবর্তী ক্লাসে শিক্ষার্থীরা পাঠবিষয়ক যেসব সমস্যায় পড়বে সেসব দূর করা হবে।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন