কাপ্তাই হ্রদে পর্যটনকে উৎসাহিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা আয়োজন রয়েছে। পর্যটক আকর্ষণের জন্য রয়েছে প্রচার-প্রচারণা। কিন্তু সেখানে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি যে যথেষ্ট গুরুত্ব পায় না, তা উঠে এসেছে প্রকাশিত খবরে। জানা যায়, যে জায়গাটিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে পানির নিচে পুরনো গাছের গুঁড়ি রয়েছে। সেই গুঁড়িতে লেগে দুর্ঘটনাকবলিত নৌকাটির তলদেশ ফুটো হয়ে যায় এবং পানি ঢুকে নৌকাটি ডুবে যায়।
সেখানে লাল পতাকা টানিয়ে নৌচলাচল নিষিদ্ধ করা হলেও নৌযানের চালকরা প্রায়ই সে নিষেধাজ্ঞা মানেন না। সন্ধ্যার পর নৌযান চলাচলের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞাও মানা হয় না। নৌকাটিতে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। সবার লাইফ জ্যাকেট ছিল না। অভিযোগ রয়েছে, অদক্ষ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক অনেকে নৌকা চালান। অনেক চালক নৌপথও ঠিকমতো চেনেন না।
ফলে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। অথচ নৌযানগুলো নিষেধাজ্ঞা মানছে কি না, লাইফ জ্যাকেটসহ নিরাপত্তা সরঞ্জাম রাখছে কি না, যাত্রীরা সেগুলো ব্যবহার করছেন কি না, অন্যান্য নিয়ম-কানুন মানা হচ্ছে কি না—সেসব দেখার কিংবা অনুপযুক্ত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার কোনো কর্তৃপক্ষীয় উদ্যোগ সেখানে দেখা যায় না। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।
বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত যে কয়টি পর্যটন এলাকা রয়েছে রাঙামাটি ও কাপ্তাই হ্রদ তার মধ্যে অন্যতম। সবুজ সুউচ্চ পাহাড়ের নিচে এমন দীর্ঘ জলপথ খুব কম দেশেই আছে। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এখানে পর্যটনের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো গেলে শুধু দেশের নয়, বিদেশের পর্যটকরাও রাঙামাটির এমন অপার সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হবে, মুগ্ধ হবে।
দেশের পর্যটনশিল্প দ্রুত এগিয়ে যাবে। এ জন্য সব মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের নাব্যতা রক্ষা করতে হবে। নৌযান চলাচল আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও নিরাপদ করতে হবে। স্থানে স্থানে যাত্রাবিরতি, আপ্যায়ন ও বিনোদনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। হোটেল-মোটেলগুলোর সেবা মানসম্পন্ন করতে হবে।
আমরা আশা করি, কাপ্তাই হ্রদে নৌযান চলাচল নিরাপদ ও মানসম্পন্ন করতে স্থানীয় প্রশাসন অবিলম্বে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। পর্যটন করপোরেশনসহ পর্যটনসংশ্লিষ্ট অন্য সংস্থাগুলোকেও তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে।