দেশেরযোগাযোগ অবকাঠামো খাতে প্রচুর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে।এতে নিঃসন্দেহে মানুষ উপকৃত হচ্ছে। যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন সহজতর হচ্ছে। কিন্তু প্রায়ইদেখা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষবা বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর দুর্বলতা ও উপযুক্ত নজরদারির অভাবে অতি প্রয়োজনীয় এই উদ্যোগগুলোই স্থানীয় মানুষের ব্যাপক দুর্ভোগের কারণ হয়।
গণমাধ্যমে প্রতিনিয়তই এধরনের অনেক খবর প্রকাশিত হয়। এধরনেরএকটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত খবরে জানা যায়, টেকেরহাট–গোপালগঞ্জ–ঘোনাপাড়ার ৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ চলছে অত্যন্ত ঢিমেতালে।এপর্যন্তদুইবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
আরো একবারমেয়াদ বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা চলছে। অথচ বছরের পর বছর মানুষকে চরম ভোগান্তিপোহাতে হচ্ছে।জানা যায়, গোপালগঞ্জের টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া সড়কটি আগে আঞ্চলিক সড়ক ছিল। এটি এখন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের অংশ হয়ে গেছে।তাই ৪৪ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়কটিকে মহাসড়কে রূপান্তরের কাজ চলছে। এর প্রস্থ বাড়িয়ে ৩৪ ফুট করা হচ্ছে। মহাসড়কে উন্নয়নের এই প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুন মাসে একনেকে অনুমোদন পায়। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। ছয়টি প্যাকেজের মাধ্যমে প্রকল্পটিতে ৬১২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়।দুইবার মেয়াদ বাড়ানোর পর কাজটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৪ সালের জুন মাসে। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, এই সময়েও কাজ শেষ হবে না। কারণ এখন পর্যন্ত সড়কটির কিছু অংশে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা বিদ্যমান। তদুপরি, কয়েকটি প্যাকেজের কাজ হচ্ছে খুবই শ্লথগতিতে। অন্যদিকে কাজ শুরুর প্রথম দিকেই সড়কের কিছু অংশে বিদ্যমান রাস্তা ভেঙে ফেলা হয়।দীর্ঘদিন এভাবে ফেলে রাখায় সেসব অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অথচ এই ভাঙা রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন বহু যানবাহন চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। গাড়ি চলার সময় ধুলায় অন্ধকার হয়ে যায়। গাড়ি উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়। দুর্ঘটনাও ঘটে। ফলে যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের প্রচুর ভোগান্তি পোহাতে হয়।গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, সড়কের ১ ও ২ নম্বর প্যাকেজের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্যাকেজের বাকি চারটি গ্রুপের ১০টি স্থানে জমি অধিগ্রহণে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এসব কারণে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর জন্য প্রধান প্রকৌশলীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ, সে পর্যন্ত এই সড়ক ব্যবহারকারীদের দুর্ভোগ যাবে না।যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে শত শত কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে একেকটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় মানুষের চলাচল সুগম করার জন্য, দুর্ভোগ বাড়ানোর জন্য নয়। আমরা আশা করি, টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া মহাসড়কের কাজ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করা হবে।