দেশে প্রতিবছর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে যে হারে যোগ্য শিক্ষার্থী বেরিয়ে আসছেন, তাঁদের সবার জায়গা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হয় না। আবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেলেও অনেকে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বিষয়ে লেখাপড়া করার সুযোগ পান না। এই শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই চলে যান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীদের চাহিদা সন্নিবেশ করে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠা শুরু হয় ১৯৯২ সাল থেকে।
তিন দশকের পথপরিক্রমায় দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনীহাই যে মূল কারণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে মেয়েদের আবাসন ব্যবস্থা করা গেলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর যেমন চাপ কমত, তেমনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ত। এখন অনেকটা বাধ্য হয়েই অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে থাকেন।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কি উচ্চতর গবেষণার তেমন সুযোগ আছে? শুধু পুঁথিগত বিদ্যা নয়, সব বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ করে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে বলে তো মনে হয় না।
শিক্ষা এখানে বাণিজ্য, এমন অভিযোগ অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। যত্রতত্র গড়ে ওঠা ক্যাম্পাস, লাইব্রেরি ও গবেষণাগারের সুযোগ না থাকা, শিক্ষকদের যোগ্যতায় ঘাটতি—এমন আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে। মানসম্পন্ন লেখাপড়া নয়, সনদ বিক্রিই কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য—এমন অভিযোগও পাওয়া যায়।
আমরা মনে করি, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই আইন মেনে চলা উচিত। আইন অমান্যকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ম মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। সামনেই ভর্তি পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরও সতর্ক হতে হবে।