করোনাকালেও থেমে নেই নারী ও শিশু নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা। কক্সবাজারে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার এক কিশোরী গত শনিবার ভোররাতে বাড়িতে কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেছে। পটুয়াখালীর বাউফলে ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে এক তরুণী তিনবার মারধরের শিকার হয়েছেন বলে খবরে প্রকাশ। নেত্রকোনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ এবং ফরিদপুরের নগরকান্দায় শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নারীর প্রতি সহিংসতা কমেনি। সহিংসতার নিপীড়নের শিকার হচ্ছে শিশুও। নারী নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনা কেন বাড়ছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্যাতনের মামলাগুলোর ‘ঠিকমতো বিচার না হওয়ার’ কারণেই নারীরা বেশি সহিংসতার শিকার হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কঠোর আইনও ধর্ষণ প্রতিরোধে ফলপ্রসূ না হওয়ার কারণ হলো যারা এ অপরাধ করছে, তারা ধর্ষণকে অপরাধ বলেই মনে করে না।
এ বিষয়ে খবরে বলা হয়েছে, পারিপার্শ্বিক নানা কারণে গড়ে ১০০টি ঘটনার মধ্যে ১০টির ক্ষেত্রেও ভুক্তভোগী নারী বা তার পরিবার মামলা করতে রাজি হয় না।
আর যা-ও বা মামলা করা হয়, সেগুলো বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। এর মধ্যে জামিনে বেরিয়ে এসে ভুক্তভোগীসহ তার পরিবারকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে আসামি। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক জরিপে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারের পর ২৪ ঘণ্টা থেকে ১৫ দিনের মধ্যে জামিন পাচ্ছে ধর্ষণ মামলার আসামিরা।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের হিসাব অনুযায়ী ২০১৭ সালে ৩.৬৬ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। ২০১৭ সালে হাজারে শাস্তি পেয়েছে চারজন। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি বলছে, দেশে ধর্ষণ ও নিপীড়নের ঘটনায় মামলা হচ্ছে ১০ শতাংশেরও কম। ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৫৩৬টি ধর্ষণের মামলার তদারকি করেছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। এর মধ্যে বিচার হয়েছে মাত্র চারটির।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নির্যাতন কমাতে হলে সত্যিকার অর্থে আইনের কঠোর প্রয়োগ হতে হবে। মামলাগুলোর দ্রুত বিচার হতে হবে। বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়িয়ে তুলছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।