চলতি বছর বন্ধ হয়ে গেছে ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও মালদ্বীপ।
গত ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ইতালির শ্রমবাজার। ঢাকায় ইতালি দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, বিপুলসংখ্যক জাল নথি বা ডকুমেন্টের কারণে ইতালি সরকার এই বছরের ১১ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের অনুকূলে ইস্যুকৃত সব কর্ম অনুমোদনের (ওয়ার্ক পারমিট) বৈধতা স্থগিত করেছে। সিন্ডিকেটের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে চলতি বছরের ৩১ মে বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চালু হওয়ার তিন মাস পরই বন্ধ হয়ে যায় দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের শ্রমবাজার। গত বছরের অক্টোবরে ওমান, ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে বাহরাইন, ২০১৭ সালে একই মাসে মিসর, ২০১৬ সালের মার্চ মাসে লিবিয়া এবং ২০১১ সালের জুলাই মাসে বন্ধ হয়ে যায় ইরাকের শ্রমবাজার।
জনশক্তি রপ্তানি আমাদের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে। জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য বড় সমস্যা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীর অভাব। আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের বাস্তবতায় বাংলাদেশের শ্রমিকরা তুলনামূলকভাবে অদক্ষ।
ফলে যেসব দেশে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ আছে, সেসব দেশে জনশক্তি রপ্তানি করা সম্ভব হয় না। বর্তমান সময়ে দক্ষতার বিকল্প নেই। অনেক পেশায়ই আমাদের কর্মীরা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি। তাই ভালো ও বেশি আয়ের পেশায় বাংলাদেশিদের নিয়োগ কম। কাজেই আমাদের এখন শ্রমবাজারের চাহিদার পরিবর্তন ও দক্ষতার বিষয়ে নজর দিতে হবে। সব কর্মক্ষেত্র সবার জন্য উন্মুক্ত না হলেও দক্ষ জনশক্তি নিজ নিজ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে নিতে পারে। বিকাশমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাই জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।কোন দেশে কোন ধরনের শ্রমশক্তি রপ্তানি করা যায়, সে ব্যাপারে আগে থেকেই জানা প্রয়োজন। ২০১৮ সালে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ শ্রমবাজার গবেষণা সেল গঠন করে। সাত বছর ধরে এই শ্রমবাজার গবেষণা সেল নিষ্ক্রিয়। এটিকে সক্রিয় করা প্রয়োজন।দক্ষ জনশক্তির রপ্তানি বাড়াতে পারলে রেমিট্যান্সও বাড়বে। যেকোনো দেশে মানুষই সম্পদ। মানুষের শ্রমে-ঘামে-মেধায়-পরিকল্পনায় একটি দেশ বা জাতির অগ্রগতি নিশ্চিত হয়। জনশক্তির নতুন নতুন বাজারও সন্ধান করতে হবে। আমাদের এখন নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করতে হবে। দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানিতে মনোযোগ দিতে হবে।