অনিয়মের কারণে বন্ধ হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। যেসব কর্মী এর মধ্যে ভিসা পেয়েছেন বা পাবেন, তাঁদের আগামী ৩১ মের মধ্যে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে হবে। এরপর বাংলাদেশ থেকে আর কোনো কর্মী মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারবেন না।
মালয়েশিয়ার সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১ জুন থেকে বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশ থেকে ওই দেশে কর্মী যাওয়া বন্ধ হচ্ছে।
বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য মতে, দেশটির শ্রমবাজার বন্ধ হতে চললেও এখনো অনুমোদন পাওয়া কোটার ৪৯ হাজার ৮৭ জন বাংলাদেশি কর্মী দেশটিতে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।২০২২ সালের আগস্ট থেকে চলতি মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৪ জন কর্মীকে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার অনুমোদন দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে গত ২২ মে পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় গেছেন চার লাখ ৭৪ হাজার ৭৪৭ জন।১৯৮৯ সাল থেকে নিয়মিতভাবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী প্রেরণ করা হচ্ছে।প্রায় আট লাখ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন পেশায় কর্মরত। এ ছাড়া সেখানে লাখ দুয়েকের মতো বাংলাদেশি অবৈধভাবে অবস্থান করছেন, যাঁরা সাধারণত পর্যটন ভিসায় বা অন্য উপলক্ষে কয়েক দিনের ভিসায় মালয়েশিয়ায় এসে থেকে গেছেন বা বেশি পারিশ্রমিকের লোভে কর্মরত স্থান থেকে পালিয়ে অন্যত্র কাজ করছেন।আবার এর ভিন্নচিত্রও আছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কাজ করতে যাওয়া বেশির ভাগ শ্রমিক প্রতারণার শিকার হয়েছেন।মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও কাজ মেলেনি। এ ছাড়া নানা ধরনের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কর্মীরা।অনুমোদন পাওয়া কোটার যে ৪৯ হাজার ৮৭ জন বাংলাদেশি কর্মী দেশটিতে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন, এই কর্মীদের এত কম সময়ে দেশটিতে পাঠানো অসম্ভব বলে মনে করছেন অভিবাসনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। অনুমোদন পাওয়া এসব কর্মী আদৌ মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোও।ফলে এসব কর্মীর মালয়েশিয়ায় যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তবে এসব কর্মী পাঠাতে সাধারণ ফ্লাইটের পাশাপাশি দুটি বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের মহাসচিব।প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, অনুমোদন পাওয়া সব কর্মীকে ৩১ মের মধ্যে মালয়েশিয়ায় পাঠাতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। অনুমোদন পাওয়া কোটার কর্মীরা মালয়েশিয়ায় যেতে না পারলে কর্মী ও রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো ক্ষতির মুখে পড়বে।অনুমোদন পাওয়া কোটার কর্মীদের মালয়েশিয়ায় পাঠানোর পাশাপাশি আমাদের এখন নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করতে হবে। দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানিতে মনোযোগ দিতে হবে।