তবে এসব দেশে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির পরিমাণ খুবই কম। যেসব দেশে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ আছে, সেসব দেশে কি জনশক্তি রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে? প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, দক্ষ কর্মী নেয় এমন দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী পাঠানোর কোটা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ।
চলতি বছর সে দেশে কর্মী পাঠানোর কোটা ছিল ১০ হাজার। গত ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চার হাজার ৬১৪ জন কর্মী পাঠাতে পেরেছে বাংলাদেশ।
এ পর্যন্ত অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ পাঁচ হাজার ৩৮৬ জন কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়নি, কিন্তু কেন?
কোটার তুলনায় কর্মীর সংখ্যা কম হওয়ার পেছনে দক্ষিণ কোরিয়ার কম্পানিগুলোর চাহিদা মূলত দায়ী।
কোটার তুলনায় কর্মীর সংখ্যা কম হওয়ার পেছনে দক্ষিণ কোরিয়ার কম্পানিগুলোর চাহিদা মূলত দায়ী।
চাহিদা কমার কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে অনেক কর্মী দু-তিন মাস পর কম্পানি বদল করেন, যা নিয়োগকর্তাদের জন্য বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিষয়টি কোরিয়ার কম্পানিগুলো পছন্দ করে না। কর্মীরা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক কম্পানি বেসিক বেতনে কাজ করাতে চায়, কিন্তু অনেক কর্মী এভাবে কাজ করতে চান না।
সুযোগমতো অন্য কম্পানিতে চলে যান। কম্পানি বদল করে অন্য কম্পানিতে গেলে বোয়েসেল জামানত বাজেয়াপ্ত করে। ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যাপারে কর্মীদের আগ্রহ কমেছে।
দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে আরো বেশি রেমিট্যান্স আয় সম্ভব হতে পারে।
কারণ দক্ষ জনশক্তি স্বাভাবিকভাবেই বেশি আয় করবে। ভালো লেখাপড়া জানা থাকায় প্রবাসজীবনে তাদের ভোগান্তিও কম হবে। আঞ্চলিক, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাহিদার প্রেক্ষাপটে আমাদের কারিগরি শিক্ষার ধরনে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা পূরণ করার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। দেশের বাইরের চাহিদার প্রতিও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
আমরা এখন মূলত অদক্ষ বাজারে কর্মী পাঠাচ্ছি। এই অদক্ষ বাজারের পাশাপাশি এখন অন্য বাজারে প্রবেশ করা জরুরি। এর জন্য কর্মনিষ্ঠা ও যথার্থ কর্মপরিকল্পনা দরকার। যে ট্রেডগুলোর কদর বেশি, সেই ট্রেডগুলোতে তাঁদের প্রশিক্ষিত করে তুলতে হবে।
অনেকে নিজেরাই দক্ষতা অর্জন করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হন। তাঁদের শুধু বৈদেশিক রীতিনীতি সম্পর্কে অবহিত করাই যথেষ্ট। তাঁদের ক্ষেত্রে যে কাজটি করতে হবে, সেটি হলো তাঁদের দক্ষতা প্রয়োগের ক্ষেত্রটি খুঁজে বের করতে হবে। অর্থাৎ জনশক্তির নতুন নতুন বাজারের সন্ধান করতে হবে।