English

23 C
Dhaka
বুধবার, জানুয়ারি ২২, ২০২৫
- Advertisement -

দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ: প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নিন

- Advertisements -

করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন বা ডেল্টা ভেরিয়েন্ট শুরুতে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাগুলোতে ছড়িয়েছিল। ভাইরাসের এই ধরনটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আগে থেকেই বিশেষজ্ঞরা কঠোরভাবে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেগুলো যথাযথভাবে পালিত না হওয়ায় সীমান্ত এলাকায় সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যায়।

কোনো কোনো জেলায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় আক্রান্তের হার ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। সীমান্ত এলাকা থেকে সেই সংক্রমণ এখন সারা দেশে ছড়াচ্ছে। জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষায় দেখা গেছে, ঢাকায় করোনা রোগীর ৬৮ শতাংশই ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকায় দৈনিক শনাক্তের হার ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৪ শতাংশ হয়েছে, অর্থাৎ বেড়েছে প্রায় ৩০০ শতাংশ। ঢাকার হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ তো দূরের কথা, সাধারণ শয্যা পাওয়াও কঠিন হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনো যদি কঠোর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে মহামারি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়তে পারে।

পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে থাকলেও মানুষের মধ্যে ন্যূনতম সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না। হাট-বাজারে উপচে পড়া ভিড়, গণপরিবহনে গাদাগাদি করে মানুষের চলাচল, হোটেল-রেস্তোরাঁয় আড্ডা, খাওয়াদাওয়া—সবই চলছে। সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা, মাস্কও পরছে না বেশির ভাগ মানুষ। এর মধ্যে এগিয়ে আসছে কোরবানির ঈদ।

সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে ঢুকবে ভারতের গরু। সেগুলো আসবে ঢাকায়। দল বেঁধে মানুষ আবার ঢাকা ছাড়বে। ফলে করোনা মহামারি সারা দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখনই হাসপাতালগুলোতে রোগীর ঠাঁই হচ্ছে না। পরিস্থিতি আরো খারাপ হলে তাদের কোথায় কিভাবে চিকিৎসা দেওয়া হবে? এই অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা থাকবে।

এমন করুণ অবস্থা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞরা কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য চূড়ান্ত ধরনের লকডাউন আরোপের পরামর্শ দিচ্ছেন। মানুষের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মার্কেট, ঘিঞ্জি পরিবেশে হাট-বাজার, হোটেল-রেস্তোরাঁ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, দ্রুত এসব ব্যবস্থা নেওয়া না হলে শনাক্তের হার ঢাকায়ও ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে, তখন সব কিছু বন্ধ করেও তেমন কোনো লাভ হবে না।

টিকা নিয়ে দেশে এক ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা অন্তত নমুনা পরীক্ষা কয়েক গুণ বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন। কারণ আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের অজান্তেই অনেককে সংক্রমিত করছেন। হাসপাতালে চাপ ক্রমেই বাড়ছে এবং সামনে আরো বাড়বে। সেই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর পাশাপাশি চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানের সংখ্যা বাড়াতে হবে। করোনা চিকিৎসায় অক্সিজেন সাপোর্ট অত্যন্ত জরুরি। অক্সিজেনের সংকট মোকাবেলায়ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। সেই সঙ্গে আরো জরুরি হচ্ছে টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ আরো জোরদার করা। বেশির ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় না আনা গেলে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন