বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) তথ্য মতে, ভারতের আসাম থেকে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রবেশের পর নদীর প্রথম ৩২ কিলোমিটারে ১০০টির বেশি চর পড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে একসময়ের স্রোতস্বিনী সুরমা নদী একদিন হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন নদীসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে সুরমা নদী খননের দাবি জানিয়ে আসছে। গত এক যুগে পানি উন্নয়ন বোর্ড চার দফায় নদীটি খননের উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে অগ্রগতি হয়েছে কমই।পরিবেশকর্মী ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুরমা নদীর মৃত্যু ঠেকাতে সুষ্ঠু পরিকল্পনা দরকার। উৎসমুখে খনন না করে মাঝখানে কিছু অংশ খনন করে লাভ নেই।
শুধু সিলেটের সুরমা নয়, সারা দেশেই নদ-নদীর অবস্থা খারাপ। নদী দখল করে মাছের ঘের বা পুকুর বানানো হচ্ছে। নদী ভরাট করে স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে।নদীতে বর্জ্য ফেলে ভরাট ও দূষণ করা হচ্ছে। কোথাও নদীপারের বাজার ও বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলার কারণে ভরাট হয়েছে নদীর তলদেশ।
এতে নদীটি হারিয়ে ফেলছে পানির ধারণক্ষমতা। ফলে অল্প জোয়ারেই ফুলে-ফেঁপে ওঠে নদী। নদী ভরাট ও সরু হয়ে যাওয়ায় বর্ষার পানি নামতে পারে না, প্লাবিত হয় আশপাশের এলাকা। আবার শুকনা মৌসুমে নদীর কোনো কোনো অংশে ছেলেরা ফুটবল খেলে। যেমন খেলছে সুরমা নদীর বুকে জেগে ওঠা বিশাল চরে।
উচ্চ আদালত নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করেছেন। নদী রক্ষায় দফায় দফায় নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, সুরমা নদীর পাশাপাশি দেশের নদী রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যরা তাদের ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করুক। দেশের সব নদীর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হোক।