English

17 C
Dhaka
সোমবার, জানুয়ারি ১৩, ২০২৫
- Advertisement -

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক: জাহাঙ্গীরনগরে ধর্ষণ

- Advertisements -
এ দেশে ছাত্ররাজনীতির রয়েছে সোনালি অতীতপ্রশংসনীয় ঐতিহ্য। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতাযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন—সব কিছুতেই ছাত্রদের ভূমিকা ছিল অগ্রণী। এখন কি ছাত্ররাজনীতির মধ্যে সেসব ঐতিহ্যের ছিটেফোঁটাও অবশিষ্ট আছে? সাম্প্রতিক কিছু কর্মকাণ্ড ছাত্ররাজনীতিকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এখন ছাত্ররাজনীতি নানা ধরনের অপকর্মে অভিযুক্ত।

অনেক নেতার হাত থেকে ছাত্রী, গৃহবধূ কেউই নিরাপদ নন।শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি—এই তিনটি হলো ছাত্রলীগের মূলনীতি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্রসংগঠনটি তাদের গঠনতন্ত্রে ঘোষিত তিন মূলনীতি থেকে যেন যোজন যোজন দূরে সরে যাচ্ছে। দেশের প্রতিটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে যে সংগঠনটি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে, এখন তারাই প্রতিনিয়ত নানা অপকর্মে জড়িয়ে বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন জঙ্গলে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রলীগ নেতা রয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান।
মোস্তাফিজ মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। সংগঠন থেকে তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। ১৯৯৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ধর্ষণের সেঞ্চুরি উদযাপন করে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় তুলেছিলেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্রসংগঠন হচ্ছে ছাত্রলীগ। একসময় এ দেশের সব প্রগতিশীল আন্দোলনেরই অগ্রভাগে ছিল এই ছাত্রলীগ।
এই ছাত্রলীগ থেকেই উঠে এসেছেন দেশ পরিচালনাকারী বহু নেতা। ক্ষমতাসীন দলে এখনো অনেক নেতা রয়েছেন, রাজনীতিতে যাঁদের অনুপ্রবেশ হয়েছিল ছাত্রলীগের হাত ধরে। ভাবা যায়, এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছেন এই ছাত্রলীগের এক নেতা।
ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সম্মিলিতভাবে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ নামের একটি কমিটি গঠন করেছেন।
দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা এই আন্দোলন করবেন। সিন্ডিকেট সভা শেষে উপাচার্য সভার সিদ্ধান্ত আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পড়ে শোনান। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোস্তাফিজের সনদ স্থগিত ও ক্যাম্পাসে তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
ভুক্তভোগীর স্বামীকে আটকে রাখার অভিযোগে একই বিভাগের মুরাদ হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার, সনদ প্রদান স্থগিত ও ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
আরো যাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়, এর মধ্যে রয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শাহ পরান, একই বিভাগের এ এস এম মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকী, একই বিভাগের হাসানুজ্জামান ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মো. সাব্বির হাসান সাগর।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে, সম্পদ বাড়ছে, কিন্তু মানুষের মানবিক গুণাবলি কমে যাচ্ছে। এখন সামনে কোনো আদর্শ নেই। আদর্শহীনতা, নীতিহীনতা দ্বারা রাজনীতি দূষিত হয়ে গেছে।
জাহাঙ্গীরনগরে ধর্ষণকাণ্ডে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, এটাই প্রত্যাশা।
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন