English

33 C
Dhaka
বুধবার, মার্চ ১২, ২০২৫
- Advertisement -

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন: অসহনীয় পর্যায়ে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন

- Advertisements -
আমাদের সমাজের পরিচয় যেন পাল্টে যাচ্ছে। পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সহনশীল সমাজের বন্ধন আজ আর নেই। নৈতিকতাও যেন নির্বাসিতপ্রায়। মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় চরমে পৌঁছেছে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হয়েছে, কিন্তু ধর্ষণ বন্ধ হয়নি। প্রায় প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। ছোট শিশুরাও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আট বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

ঘটনাটি সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। সেই শিশু এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে সিএমএইচে। এ ছাড়া গত শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে এক কলেজ শিক্ষার্থী। গত শুক্রবার মুন্সীগঞ্জে মুক্তারপুর এলাকায় ৮ ও ১০ বছর বয়সী দুই শিশুকে খাবার ও বেলুন কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঢাকার আশুলিয়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকালের খবরের কাগজেও আছে, কেরানীগঞ্জ ও নরসিংদীতে দুই অন্তঃসত্ত্বা নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। আছে এ রকম আরো বেশ কিছু খবর।
দেশজুড়ে অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে পুরো দেশের মানুষ। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গত শনিবার রাত থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ।

কঠোর আইন থাকলেও মামলা করা থেকে শুরু করে তদন্ত, সাক্ষ্য-প্রমাণ, বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা ইত্যাদি কারণে মামলাগুলো বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। ধর্ষণ মামলার বিচার বিলম্বিত হবে কেন? জানা যায়, অভিযোগ দায়েরে দেরি হওয়া, সঠিকভাবে সঠিক সময়ে আলামত সংরক্ষণ না করা, ফরেনসিক পরীক্ষায় দুর্বলতা, অভিযোগের সপক্ষে জোরালো সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাব বা ভয়ে-চাপে সাক্ষী অনুপস্থিত থাকা, মামলার তদন্তে পুলিশের অবহেলা, অদক্ষতা, দুর্বলতা বা সঠিক তদন্ত না হওয়ায় রেহাই পেয়ে যায় ধর্ষণের অভিযুক্তরা। অভিযোগ আছে, তদন্তে দীর্ঘসূত্রতার কারণেও মামলা বিলম্বিত হয়।

যখন মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় চরমে পৌঁছে, সমাজ থেকে নৈতিকতা নির্বাসনে যায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় রাষ্ট্রের দুর্বলতা বড় হয়ে দেখা দেয়; তখনই নারী নির্যাতন, ধর্ষণ-নিপীড়ন বেড়ে যায়। এর কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি সামাজিক দুর্বৃত্তায়ন বন্ধে অপরাধীদের দ্রুততম সময়ে মামলা নিষ্পত্তি এবং কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোকে আরো সক্রিয় করতে হবে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রকে বিশেষ উদ্যোগী হওয়ার এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আমরা আশা করি, ধর্ষণকারীদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক দণ্ড দেওয়া হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন