বাংলাদেশে কিডনি ও লিভারসহ মানবদেহের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছে একটি চক্র। গত শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে জয়পুরহাট জেলার গোয়েন্দা পুলিশ এমনই এক চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গত শনিবার তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। জয়পুরহাট জেলায় কিডনি বেচাকেনা চক্র দীর্ঘদিন থেকেই সক্রিয়।
কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য দুই ধরনের দাতা পাওয়া যায়। একটি হচ্ছে, আগে থেকে দান করে যাওয়া ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ ব্যক্তির কিডনি এবং স্বেচ্ছায় দান করা জীবিত ব্যক্তির কিডনি। ১৯৯৯ সালের কিডনি প্রতিস্থাপন আইন অনুযায়ী কেবল নিকটাত্মীয়রাই কিডনি দান করতে পারেন। কেনাবেচার তো প্রশ্নই নেই। এর পরও এই ব্যবসা কিভাবে চলছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। চিকিৎসকদের মতে, সম্পূর্ণ সুস্থ একজন মানুষের একটি কিডনি বা লিভারের অংশবিশেষ দান করলে এবং পরবর্তীকালে নিয়ম-কানুন মেনে চললে তেমন সমস্যা হয় না। কিন্তু কিডনি ব্যবসার নামে যেভাবে কিডনি নেওয়া হচ্ছে, তা এক ধরনের হত্যারই শামিল।
মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেনাবেচার এই অমানবিক ও নিষ্ঠুরতম প্রক্রিয়া কঠোরভাবে দমন করতে হবে। এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। এই চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করলেও প্রধান দুই হোতাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। কিডনি বিক্রি ঠেকাতে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে সব মহলকে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।