নিকট-অতীতে বাংলাদেশে দুর্নীতির বিস্তার তুঙ্গে উঠেছিল। ২০০১ সাল থেকে পর পর পাঁচ বছর বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। অর্থাৎ দুর্নীতিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল এক নম্বর। পরবর্তী সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থার দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতার কারণে দুর্নীতি কিছুটা কমলেও এখনো সেটি লজ্জাকর। বাংলাদেশ এখনো সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর সঙ্গেই আছে। এবার মোট ১৮০টি দেশকে নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ভালো থেকে খারাপের দিকে গেলে বাংলাদেশের ক্রমিক অবস্থান হয়েছে ১৪৭, যা আগের বছরেরই অনুরূপ।
অবশ্য টিআইয়ের এই ধারণা সূচক নিয়ে সারা বিশ্বেই সমালোচনা রয়েছে। অনেকের মতে, এটি তৈরি করার ক্ষেত্রে বিশ্বরাজনীতির মেরুকরণের প্রতিফলন থাকে। অভিযোগ আছে, কোনো দেশের সরকারকে অনুকূল মনে না হলে সেই সরকারের বিরুদ্ধে জনমত উসকে দেওয়ার জন্যও এই প্রতিবেদনকে কাজে লাগানো হয়।
বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘অনেকের মতেই নির্বাচনের বছর বলে বিশ্ববেনিয়াদের প্রেসক্রিপশনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি সূচকে বাংলাদেশকে এক ধাপ নামানো হয়েছে। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
এটা ঠিক দুর্নীতি নানাভাবে রাষ্ট্রের ক্ষতি করে। রাষ্ট্রের অপচয় বাড়ায়, উন্নয়নের গতি স্তিমিত করে, জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডের সুফল থেকে মানুষকে বঞ্চিত করে। তাই কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে দুর্নীতির লাগাম টানতেই হবে।
এ জন্য দুদককে আরো শক্তিশালী করতে হবে, এর কর্মপরিধি বাড়াতে হবে এবং একে অনেক বেশি স্বাধীনতা দিতে হবে। দুর্নীতিবিরোধী অন্যান্য সংস্থার তৎপরতাও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি সরকারের সব কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে।