English

19 C
Dhaka
শনিবার, জানুয়ারি ১১, ২০২৫
- Advertisement -

দাম নাগালে রাখুন: ওষুধের বাজারে নৈরাজ্য

- Advertisements -

দেশের ওষুধের বাজারে এক ধরনের নৈরাজ্য চলছে। এখানে ঔষধ প্রশাসনের কার্যত কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই। ফলে বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ওষুধের দাম। দেশে গত কয়েক বছরে বেশির ভাগ অতি প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম শতভাগ পর্যন্ত বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি বলেছে, ডলার ও গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির কারণে তাদের ওষুধের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তাই ওষুধের দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় দেখছে না তারা। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের দাম বাড়ালে চিকিৎসাসেবা বড় সংকটে পড়বে। তাঁদের মতে, ওষুধের দাম নির্ধারণ করা উচিত জনগণের ক্রয়ক্ষমতা, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ এপ্রিল রুলসহ এই আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদেশে ইচ্ছামাফিক ওষুধের দাম নির্ধারণে কম্পানিগুলোকে বিরত রাখতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়। অনুমোদন ছাড়া বিদেশি ওষুধের কাঁচামাল আমদানি, ওষুধ তৈরি-বিক্রি থেকে ওষুধ কম্পানিগুলোকে বিরত রাখতেও নির্দেশ দেওয়া হয় ওই আদেশে।
ওষুধ ও কসমেটিকস আইন, ২০২৩-এর ৩০ ধারা অনুসারে ওষুধের দাম নির্ধারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং ওষুধ ও কসমেটিকস আইন, ২০২৩-এর ৩০ ধারা অনুসারে ওষুধের দাম নির্ধারণ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়।
বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি বলছে, গত তিন বছরে ক্রমবর্ধমান হারে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে। এতে বিদেশ থেকে আমদানি করা কাঁচামালের খরচ প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। একইভাবে গ্যাস-বিদ্যুৎ বা জ্বালানি খরচ দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে  উৎপাদন খরচ মুখ্য হতে পারে না। এভাবে চলতে থাকলে দরিদ্র, হতদরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবার বাইরে চলে যাবে।
চিকিৎসাবৈষম্য আরো বাড়বে। সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবাবঞ্চিত হবে।
এমনিতেই ঊর্ধ্বমুখী পণ্যমূল্যের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে মানুষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর মধ্যে ওষুধের দাম যে মাত্রায় বাড়ানো হয়েছে, তা শুধু অযৌক্তিক নয়, অন্যায়ও। প্রায় প্রতিবছরই ওষুধের দাম একাধিকবার বাড়ানো হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, এ ক্ষেত্রে কারো কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ন্যূনতম যৌক্তিক অবস্থানে রাখার কোনো চেষ্টাও দৃশ্যমান নয়। দেখা যায়, একই জিনেরিকের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওষুধের দামে অনেক পার্থক্য।
বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির তথ্য অনুযায়ী, কম্পানিগুলো দেড় হাজার জিনেরিক নামের ওষুধ তৈরি করে, যেগুলো প্রায় ৩১ হাজার ব্র্যান্ড নামে বিপণন করা হয়। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় তালিকাভুক্ত ১১৭টি জিনেরিক নামের ওষুধের দাম ঔষধ প্রশাসন নির্ধারণ করে।
বাকি ওষুধগুলোর দাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোই নির্ধারণ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের দাম সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে ওষুধ কম্পানিগুলোর প্রমোশন ও মার্কেটিং খরচ কমিয়ে আনতে পারে। চিকিৎসকদের কমিশন কমিয়ে দিতে পারে। সরকার কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক কমিয়ে দিতে পারে।
আমাদের প্রত্যাশা, জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মূল্য সাধারণ রোগীদের নাগালের মধ্যে রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন