English

18 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
- Advertisement -

দক্ষতা বাড়াতে উদ্যোগ নিন: দুদক টালমাটাল

- Advertisements -
সবাই একবাক্যে স্বীকার করেন যে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় দুর্নীতি। কিন্তু স্বাধীনতার পাঁচ দশক পার করে এসেও আমরা সেই দুর্নীতির লাগাম টানতে পারিনি, বরং দুর্নীতির ডালপালা আরো বিস্তার লাভ করেছে। গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে শ্বেতপত্র প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু সেই লাগামহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানত ব্যবস্থা নেবে যে সংস্থাটি, সেই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কী হাল? প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেড় মাস ধরে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটিতে শূন্য রয়েছে চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনারের পদ।

এতে ‘অভিভাবকহীন’ দুদকের কার্যক্রমে নেমে এসেছে এক ধরনের স্থবিরতা। আর এই সুযোগে প্রতারকচক্র দুদকের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি ও হয়রানি করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বে এক নম্বর দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ ছিল বাংলাদেশ। এখনো বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় দুর্নীতিগ্রস্ত একটি দেশ।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিচের দিকে ডজনখানেক দেশের মধ্যেই থাকে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণায় উঠে এসেছে, রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি আমলা ও ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত। রাজনীতিবিদরা দুর্নীতিগ্রস্ত থাকায় দুর্নীতির রাশ টানাও ছিল কঠিন কাজ। দেশে একটি পরিবর্তন হয়েছে।

এখনো যদি দুদককে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সক্রিয় করা না যায়, তাহলে দেশের দুর্নীতি কমবে কিভাবে? দুদকের সাবেক মহাপরিচালক (আইন) ও সাবেক জেলা জজ মো. মঈদুল হোসেন বলেন, ‘দুদকের মূল চালিকাশক্তি হলো এর চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার। অনুসন্ধান, মামলা, তদন্ত ও বিচারের প্রতিটি পর্যায়ে কমিশনের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।’ দেড় মাস ধরে যদি চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদ খালি থাকে, তাহলে দুদকের কার্যক্রম চলে কিভাবে?

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা ‘দুর্নীতি দমন ব্যুরো’ বিলুপ্ত করে ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘দুর্নীতি দমন কমিশন’। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুলতান হোসেন খান। চার বছর মেয়াদ পূরণের আগেই ২০০৭ সালে ‘এক-এগারোর’ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তিনি পদত্যাগ করেন।

২০০৭ সালে সাবেক সেনাপ্রধান হাসান মশহুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে পুনর্গঠিত হয় কমিশন। তিনিও মেয়াদ পূরণের আগেই ফিরে যান। এর পর থেকে দুদকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন মূলত আমলারা। সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত একটি শ্রেণির মধ্য থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ নিয়ে অনেকেই অতীতে আপত্তি তুলেছেন। উচ্চ আদালত থেকেও অতীতে এ ব্যাপারে বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ছিল স্বল্প সময়ের জন্য চেয়ারম্যানের দায়িত্বে একজন সাবেক বিচারপতিকে নিয়োগ এবং দুদকের জন্য আলাদা ক্যাডার সার্ভিসের মাধ্যমে লোকবল নিয়োগ দেওয়া। এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন।

দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করতে হলে দুদককে শক্তিশালী করাসহ দুর্নীতিবিরোধী ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। কেউ যাতে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ও সম্পদ ভোগদখল করতে না পারে, সম্পদের স্বচ্ছ হিসাব দিতে বাধ্য হয়, সেভাবেই নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন