হঠাৎ করেই বহুতল ভবন ধসে পড়ে, কাত হয়ে যায়—নিকট অতীতে খোদ রাজধানীতেই এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। হতাহতেরও ঘটনা ঘটেছে। পরে রাজউক এসে বলে, ভবনটির অনুমোদন ছিল না। প্রচুর মানুষ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন হাউজিং কম্পানি বা আবাসন প্রতিষ্ঠান থেকে ‘আবাসিক প্লট’ কিনে প্রতারিত হচ্ছে।
বড় অভিযোগ হলে রাজউক বা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থা কোনো দায়দায়িত্ব নেয় না। ‘অনুমোদন নেই’ বলে দায় এড়িয়ে যায়। এমনই একটি খবর এসেছে । তাতে বলা হয়েছে, বিভাগীয় শহর খুলনায় ১০৮টি আবাসন প্রতিষ্ঠান ব্যবসা পরিচালনা করছে। এর মধ্যে ১০টি বৈধ, বাকি ৯৮টি অবৈধ। অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোও দিব্যি প্লট ও ফ্ল্যাটের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। প্লাবনভূমিতে গড়ে ওঠা সেসব আবাসন এলাকায় রাস্তা, খালি জায়গা রাখা বা অন্যান্য নিয়মের প্রায় কিছুই মানা হচ্ছে না। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) মাঝেমধ্যে সাইনবোর্ড ভেঙে দেওয়া ছাড়া প্রায় কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।
দেশে মানুষ বাড়ছে। ঘরবাড়ির চাহিদা বাড়ছে। আবাসন এলাকার লোভনীয় বিজ্ঞাপন বা সুযোগ-সুবিধার কথা শুনে সাধারণ মানুষ নিজের সব সঞ্চয় দিয়ে একখণ্ড জমি বা ফ্ল্যাট কেনে। ঘরবাড়িও তৈরি করে। কিন্তু নিয়মনীতি না মেনে বা অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব আবাসন এলাকাকে কেডিএ কি অনুমোদন দেবে?
অনুমোদন না দিলে যাঁরা প্লট কিনছেন তাঁরা সেখানে বাড়ি তৈরি করবেন কিভাবে? আবার কৃষিজমিতেও অনুমোদনহীন অনেক আবাসন এলাকা গড়ে উঠেছে। দিনে দিনে সেই জমির চরিত্র বদল হচ্ছে। সেসব জমিতেও বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হতে হবে। এমন ঘটনা শুধু খুলনায় নয়, সারা দেশেই ঘটছে। এসব মানুষকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব কি প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নেবে না? প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, খুলনা শহরের সিটি বাইপাস সড়ক অথবা খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কের দুই পাশে বহু আবাসন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড চোখে পড়ে। অনুমোদনহীন এসব প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড কেন প্রশাসনের চোখে পড়ে না?
আমরা চাই অনুমোদনহীন আবাসন ব্যবসা এবং মানুষের সঙ্গে প্রতারণা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। শুধু সাইনবোর্ড ভেঙে দায়িত্ব শেষ করলেই হবে না, প্রতারণার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে।