সিরাজগঞ্জে পরীক্ষাকেন্দ্রে খাতা দেখতে না দেওয়ায় সহপাঠীদের মারধরে আহত এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আরো পাঁচ জেলায় পাঁচজন খুন হয়েছে এবং তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।সাতক্ষীরা ও হবিগঞ্জে সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত ২২ জন।
এসব ঘটনা আলাদা নয়, বরং একত্রে আমাদের সমাজের গভীর নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিচ্ছবি। এই মা ও শিশুর মৃত্যু দেখাচ্ছে পরিবার ও সামাজিক নিরাপত্তার ব্যর্থতা। আবার সহপাঠীর হাতে সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনায় আমাদের আইন-শৃঙ্খলা তো বটেই, সামাজিক মূল্যবোধেরও বিপর্যয়কে নির্দেশ করে।
স্কুল, পরিবার, রাষ্ট্র কেউ কি তাহলে আর নৈতিকতা শেখাতে পারছে না, নাকি আগের সরকারের বিচারহীনতার ধারাবাহিকতা এই অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ও সমাজে অপরাধ বাড়িয়ে তুলছে?
ঘটনাগুলো কেবল দুঃখের ঘটনা নয়, আমাদের জন্য একটি সংকেত।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দায় তো সরকার এড়াতেই পারে না। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য, শিক্ষার ভূমিকা এবং সমাজের দায়িত্বের প্রতি গভীর অবহেলার ফল হচ্ছে এসব সহিংসতা। পারিবারিক সহিংসতা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সহপাঠীদের মধ্যে সহিংস প্রতিযোগিতা, রাজনৈতিক সহিংসতা—এগুলো আমাদের ভেতরকার নৈতিকতা, সহানুভূতি ও মানবিকতাকে মেরে ফেলছে।
নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ঘটনায় পুরো দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির প্রেক্ষাপটে চলছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর বিশেষ তিনটি অভিযান, যার মধ্যে রয়েছে অপারেশন ডেভিল হান্ট, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাঁড়াশি অভিযান এবং যৌথ বাহিনীর অভিযান।
কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে সরকারের এমন প্রচেষ্টায়ও থেমে নেই অপরাধ ও সহিংসতা। প্রচলিত আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক অনুশাসন ও মূল্যবোধগুলো ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে নাগরিকের মনে নিরাপত্তাবোধ তৈরি করা।