ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, হরিণ জবাই এবং ট্রেনে তোলার সঙ্গে যে চার-পাঁচজন জড়িত, তাদের প্রায় সবাই রেলওয়ের কর্মচারী। ধারণা করা হয়, হরিণটি ট্রেনের ধাক্কায় কিছুটা আহত হয়েছিল। লোভ সামলাতে না পেরে তারা ট্রেন থামিয়ে আহত হরিণটি ধরে এবং জবাই করে ইঞ্জিন রুমে তুলে নেয়। তারা ভাবেনি যে ট্রেনের যাত্রীরাও বিষয়টির প্রতি নজর রাখছে। তারা এটিও ভুলে গিয়েছিল যে মাঝপথে এভাবে ট্রেন থামানো যায় না।
পোস্টমর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী হরিণটির আঘাত গুরুতর ছিল না। জবাই করা না হলে এটি আঘাত সামলে বেঁচে যেতে পারত। স্থানীয় পরিবেশবাদীরা এমন নিষ্ঠুর ঘটনার জন্য জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে অবস্থিত লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি বনাঞ্চল। পৃথিবীতে যে ২৫টি প্রাইমেট প্রজাতি বিলুপ্তির সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হুলুক গিবন, যা এই লাউয়াছড়া বনে অল্প সংখ্যায় রয়েছে। এখানে মায়া হরিণসহ মোট ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়। রয়েছে অন্যান্য প্রাণী ও উদ্ভিদের এক অতি মূল্যবান সমাহার।
অথচ বনটির রক্ষণাবেক্ষণে যথেষ্ট গুরুত্ব নেই। শুধু লাউয়াছড়া নয়, এই জেলায় লাঠিটিলা, রাজকান্দি বনসহ আরো অনেক বনাঞ্চল রয়েছে। রয়েছে হাকালুকি ও হাইল হাওরের মতো প্রাণবৈচিত্র্যের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি। এসব সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও রয়েছে চূড়ান্ত ধরনের অবহেলা।
আমরা চাই, লাউয়াছড়া বনে মায়া হরিণ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।