মহাসড়কে শ্লথগতির যানবাহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ডিভাইডার বসানো হয়েছে। মহাসড়কের অনেক বাঁক সোজা করা হয়েছে কিন্তু কোনোভাবেই সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। নতুন আইনও হয়েছে। কিন্তু তার পরও বন্ধ হয়নি সড়ক দুর্ঘটনা।
নানা ব্যবস্থা নেওয়ার পরও সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে দেশজুড়ে। আমাদের দেশে চালকদের বড় সীমাবদ্ধতা হচ্ছে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা। তাঁদের অনেকেই আধুনিক সড়ক নির্দেশনা বুঝতে অক্ষম। ফলে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে যায়। দেশের সড়ক-মহাসড়কে এমন অনেক দুর্ঘটনা ঘটে, যেগুলোকে দুর্ঘটনা না বলে হত্যাকাণ্ডও বলা যায়। সড়ক দুর্ঘটনায় মূল্যবান প্রাণহানিকে শুধু দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার কোনো কারণও নেই। অনেক দুর্ঘটনাই চালকের ভুলে ঘটে থাকে। অনেক চালক রাত-দিন গাড়ি চালান। অত্যধিক ক্লান্তি এবং গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে যাওয়ার কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। আবার প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালানো, গাড়ি চালাতে চালাতে মোবাইল ফোনে কথা বলাসহ বহু অনিয়ম ঘটে রাস্তায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক গতিতে যানবাহন চলাচল না করাও সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। নগর সড়কে যান চলাচলে গতি থাকার কথা ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৫ কিলোমিটার। আঞ্চলিক সড়কে নির্ধারিত গতি ৪০ কিলোমিটার। মহাসড়কে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার গতি নির্ধারিত থাকলেও চলাচল করে ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার গতিতে। নগর, আঞ্চলিক ও জাতীয় মহাসড়কে যান চলাচলে নির্ধারিত নির্দিষ্ট গতি মানা হচ্ছে না। এআরআইয়ের এক গবেষণা তথ্য বলছে, সব ধরনের সড়ক দুর্ঘটনার ৮৪ শতাংশ ঘটে অতিরিক্ত গতির কারণে। সোজা পথে দুর্ঘটনা ঘটে ৬৭ শতাংশ, বাকিটা সড়কের বাঁকে। সোজা পথে যানের গতিও থাকে বেশি।
আবার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ চালকের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। আবার বৈধ লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন এমন চালকের ৩১ শতাংশ কোনো অনুমোদিত ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেনি। ফলে চালকদের বেশির ভাগই ট্রাফিক আইন ভালো জানে না। আবার লাইসেন্সহীন অদক্ষ চালকের হাতে, এমনকি অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের হাতেও গাড়ির চাবি তুলে দেওয়া হয়।
সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো যখন সবার জানা, তখন ব্যবস্থা নিতে দেরি কেন? সঠিক ব্যবস্থা নিলে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন