বেশ কিছুদিন থেকেই অস্থিতিশীল দেশের চালের বাজার। যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছাড়া বাজারে চালের মূল্যবৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। আমন মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে অনেক এলাকায় কৃষকের গোলায় উঠেছে নতুন ধান। এই মৌসুমে গতবারের তুলনায় ছয় লাখ মেট্রিক টন আমন ধান বেশি উৎপন্ন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। মাঠ ফসলের তথ্যও বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। তার পরও কমছে না চালের দাম। টিসিবির তথ্য বলছে, এখন খুচরা বাজারে যে দামে চাল বিক্রি হচ্ছে তা আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ পর্যন্ত বেশি। রাজধানীর বাজারে সাধারণ মানের নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি। আগেও এই দামই ছিল। এ ছাড়া আটাশ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, কাজললতা ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, পাইজাম ৫২ থেকে ৪৫ টাকা, গুটি স্বর্ণা ৪২ থেকে ৪৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এসব চালের দাম আমন মৌসুম শুরুর আগেও একই ছিল।
আমন মৌসুম শুরু হওয়ার পরও বাজারে চালের দাম বাড়তি কেন? ব্যবসায়ীদের ভাষ্য হচ্ছে, এখনো বাজারে নতুন চাল পুরোপুরি না আসার কারণে পুরনো চালের দাম কমছে না। এ ছাড়া ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের সরবরাহ খরচ বেড়েছে। ফলে এই সময়টাতে দাম যতটুকু কমার কথা ছিল ততটা কমছে না। তাদের হিসাবে ডিজেলের দাম বাড়ায় কেজিপ্রতি ২৬ পয়সার ওপরে সরবরাহ খরচ বেড়েছে।
বাংলাদেশের বাজারে একটি অদৃশ্য সিন্ডিকেট সব সময় সক্রিয়। পণ্যমূল্য ওঠা-নামায় এই সিন্ডিকেটের হাত থাকে। দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রেও থাকে নানা অজুহাত। এ ছাড়া এখানে কোনো পণ্যের দাম একবার বেড়ে গেলে সহজে তা কমানো যায় না। চালের ক্ষেত্রেও তেমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা যেতে পারে।
চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুরুতেই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে আমরা মনে করি। সরকার নিজের মজুদ হিসাব করে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখতে পারলে ব্যবসায়ীদের কারসাজি করার সুযোগ থাকবে না। সরকারের মজুদ বাড়ালে ও আরো আগে বিকল্প বিপণনব্যবস্থা চালু করা গেলে বাজারে তার প্রভাব পড়বে। সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিং চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করবে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন