কৃষিতে বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়। ধান, গম ও ভুট্টা বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। সবজি উৎপাদনে তৃতীয় আর চাল ও মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে। গত এক যুগে দেশে রীতিমতো সবজি বিপ্লব ঘটে গেছে। এখন দেশের প্রায় সব এলাকায় সারা বছরই সবজির চাষ হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, শসাসহ রকমারি শীতকালীন সবজিতে মাঠ ভরে গেছে। ধারণা করা হয়েছিল, শীতের সবজি আসতে শুরু করার পর থেকে দেশের কাঁচাবাজারে স্বস্তি ফিরবে। বাস্তবে তা ঘটেনি। বাজারে শাক-সবজি ও তরিতরকারির দাম এখনো সাধারণের নাগালে আসেনি।
সাধারণত সরবরাহ চাহিদার তুলনায় কম হলে পণ্যমূল্যে তার প্রভাব পড়ে। বাজারভেদে দাম বেশি হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। অথচ খোঁজ নিলে দেখা যাবে, মফস্বলের পাইকারি বাজারে দাম তেমন বাড়েনি। প্রান্তিক পর্যায়ে চাষি এই বাড়তি দাম থেকে লাভবান হচ্ছে না। কিন্তু শহরের বাজারে সবজির দাম কমছে না। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, কৃষক উৎপাদনে যে খরচ করেন সবজির ভরা মৌসুমে ব্যাপক প্রতিযোগিতায় সে খরচটুকুও অনেক সময় অনেক পণ্যে পান না। এখানে সিন্ডিকেটের আড়ালে একটি সাপ্লাই চেইন থাকে।
তারা যে মূল্য নির্ধারণ করবে সে দামেই কৃষককে বিক্রি করতে হয়। আর ব্যাপারী ও আড়তদার মিলে যে দাম ঠিক করবেন, সেই দামেই কিনতে হবে খুচরা বিক্রেতাদের। সাপ্লাই চেইনে আড়তদার ও ব্যাপারীর সিন্ডিকেটের শক্তিটাই সবচেয়ে বেশি। ফলে কৃষক যে দামে সবজি বিক্রি করেন ভোক্তাকে কিনতে হয় তার কয়েক গুণ বেশি দামে।
বাংলাদেশের কৃষকরা প্রতিকূল আবহাওয়ায়ও আগাম সবজি উৎপাদন করে সরবরাহ করছেন। কিন্তু সংরক্ষণ এবং বাজারজাত করার বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় কম দামে মহাজনদের হাতে সবজি তুলে দিতে বাধ্য হন তাঁরা।
কৃষিপণ্যের বাজারেও মধ্যস্বত্বভোগীরা সুবিধা নিচ্ছে। উৎপাদিত কৃষিপণ্য মধ্যস্বত্বভোগীর মাধ্যমে যখন ভোক্তার কাছে পৌঁছায় তখন দাম বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এই নৈরাজ্য ঠেকাতে কৃষিজাত পণ্যের মূল্য বেঁধে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা, বাজার স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি এমন ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে কৃষক ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত না হন।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন