তবে বৃহস্পতিবার কয়েকটি সবজির দাম কিছুটা কমেছে। ফার্মের ডিমের দাম এখনো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। মসলার বাজারও চড়া। আমাদের বাজারে কোনো নিয়ম-নীতি বা নৈতিকতার বালাই নেই।
ব্যবসায়ীরা চাইলেই তাঁদের ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে দিতে পারেন। আর এ জন্য তাঁদের অজুহাতের কোনো অভাব হয় না। কখনো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, কখনো আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই, কখনো বৃষ্টি, রাস্তা খারাপ—আরো কত কী! সম্প্রতি ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি করেছে, মূল্য নয়।সেই অজুহাতে ব্যবসায়ীরা আমাদের দেশি পেঁয়াজের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাড়িয়ে দিয়েছেন আগের মূল্যে মিয়ানমার বা অন্যান্য দেশ থেকে আনা পেঁয়াজের দামও।অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, ব্যবসায়ীদের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধিটাই যেন এ দেশে যৌক্তিক বা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। সরকারের কিছু সংস্থা ও বিভাগ আছে, যাদের কাজ বাজার মনিটরিং করা এবং অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ বা নিয়ন্ত্রণ করা। তারা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ক্রেতাদের শুধু নানা রকম উপদেশ দিয়ে যায় এবং প্রকারান্তরে মূল্যবৃদ্ধির পক্ষে সাফাই গায়।ভারতে শুল্ক ৪০ শতাংশ বাড়ার কারণে কেজিপ্রতি দাম কত বাড়তে পারে এবং বাজারে কত বেড়েছে তা হিসাব করে কখনো ক্রেতাদের জানিয়েছে কি? ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা টিসিবি নামে সরকারের একটি সংস্থা আছে, যাদের দায়িত্ব সময়মতো বাজারে হস্তক্ষেপ করা এবং নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু তাদের অতি নগণ্য কর্মকাণ্ড বাজারের ওপর কোনো প্রভাবই তৈরি করতে পারে না।আলু আমরা আমদানি করি না, তার দাম কেন হঠাত্ বেড়ে গেল? ডিমও আমদানি করি না, অথচ প্রায়ই ডিমের দাম লাফিয়ে বাড়ে। বাংলাদেশের পশ্চিম সীমান্তের ওপাশেই কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় ডিমের দাম ৫৫ থেকে ৬০ রুপি, যা বাংলাদেশি টাকায় দাঁড়ায় ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।আমাদের বাজারে ডিম কেন ১৫০ টাকার নিচে নামে না? মাংস অনেক দিন থেকেই দরিদ্র বা নিম্নমধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। মাছের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে মাছও তাদের সাধ্যের বাইরে। সবজির দামও যদি লাফিয়ে বাড়ে, তাহলে তারা যাবে কোথায়? এ অবস্থায় মোটা চালের দামও ক্রমেই বাড়তে শুরু করেছে। আমরা আশা করি, দরিদ্র মানুষকে রক্ষায় দ্রুত জোরদার কর্মসূচি নেওয়া হবে।