বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে একটা বড় অংশই এখন বেকার। পড়াশোনা শেষ করে বছরের পর বছর চাকরির জন্য অপেক্ষা করছে তারা।
দেশে প্রতিবছর ২০ লাখের বেশি জনশক্তি শ্রমবাজারে প্রবেশ করে, যেখানে কর্মসংস্থানের মাত্র ৫ শতাংশ সরকারি খাতে আর ৯৫ শতাংশই বেসরকারি উৎসে। উচ্চশিক্ষা শেষ করে বেশির ভাগই এখন সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষা করে বছরের পর বছর।
একাধিক বিসিএস এবং সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়ে অনেকের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। কারণ চাকরিপ্রত্যাশীর তুলনায় চাকরির সুযোগ নেই। ২০২২ সালের শ্রমশক্তি জরিপের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ও সমপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ডিগ্রিধারী উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারের হার এখন ১২ শতাংশে পৌঁছেছে। সংখ্যার বিচারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে বেকার বসে আছেন প্রায় আট লাখ নারী-পুরুষ।প্রতিবছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ছেলেমেয়েরা শিক্ষিত হয়ে বের হচ্ছেন, কিন্তু তাঁরা চাকরি পাচ্ছেন না। অথচ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গত জুন মাসের পরিসংখ্যান বলছে, সরকারি চাকরিতে শূন্যপদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। এটাই এযাবৎকালের রেকর্ডসংখ্যক শূন্যপদ। বেসরকারি খাতে চাকরির বাজার সেভাবে সম্প্রসারিত হয়নি। সরকারি চাকরির তুলনায় বেসরকারি খাতের চাকরি সেভাবে আকর্ষণীয় নয়।বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, স্থানীয় বাজারে চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি পাওয়া যায় না। ফলে দেশের বেসরকারি খাতের অনেক উচ্চপদে বাইরের দেশ থেকে জনশক্তি নিয়োগ করা হয়। এর পেছনের কারণ হচ্ছে, তরুণরা যে শিক্ষা নিয়ে বের হচ্ছেন, এর চাহিদা চাকরির বাজারে নেই।আজকের তরুণদের জন্য যথাযথ ও পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান নেই। এটা ঠিক যে দেশের অনেক তরুণ এখন অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত। তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। তাঁদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাটাই এখন জরুরি। উচ্চশিক্ষিত তরুণদের উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে দেশ এগিয়ে যাবে।