সাম্প্রতিক সময়ে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়েছে। করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, মৃত্যুহারও বেড়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার জনসমাগমে বিধি-নিষেধসহ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। বাস ও ট্রেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহন করতে বলা হয়েছে। বাসভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকেই ট্রেনের আসনসংখ্যার অর্ধেক ফাঁকা রেখে টিকিট বিক্রি শুরু করেছে রেলওয়ে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত বছরও একই নিয়ম চালু করেছিল সংস্থাটি।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত সোমবার পর্যন্ত ছয় লাখ ৮৯৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে আট হাজার ৯৪৯ জনের। গত বছরের ৩০ নভেম্বরের পর থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমছিল। কিন্তু মার্চের শুরু থেকে তা দ্রুত বাড়ছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সবাইকে সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব অফিস ও কারখানা অর্ধেক জনবল দিয়ে পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে এবং জনসমাগম সীমিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছায় সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়—সব ক্ষেত্রে সব ধরনের জনসমাগম সীমিত করাসহ মোট ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। সরকারের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নির্দেশনা সারা দেশে কার্যকর হবে এবং কমপক্ষে দুই সপ্তাহ তা বলবৎ থাকবে।
বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রে জনসমাগম সীমিত করার পাশাপাশি মেলা বা সামাজিক অনুষ্ঠান নিরুৎসাহ করতে বলা হয়েছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এত দিন একরকম বন্ধই ছিল, এবারের নির্দেশনায় মাদরাসাও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। গণপরিবহন ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় মানুষের সংখ্যা আসনসংখ্যার অর্ধেকে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
বিদেশ থেকে আসা সবাইকে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। মসজিদসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক দিকে যাচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনা জারির যৌক্তিকতা রয়েছে। শিশুদের কথা ভেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটি ২২ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি সবার মেনে চলা উচিত। সামাজিক দূরত্বও রক্ষা করতে হবে।