নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধনীতে ধর্ষণের বিচারে মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান যুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর সংশোধনী অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হওয়ার পর জাতীয় সংসদে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল-২০২০’ পাস হয়েছে। কিন্তু ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ দমনে শুধু মৃত্যুদণ্ডের আইনই যে যথেষ্ট নয়, সাম্প্রতিক ঘটনাবলিই তার প্রমাণ। ধর্ষণের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করা হলেও ধর্ষণ কমেনি।
এক দম্পতি বাসে নওগাঁ থেকে এসে মহানগরীর ভোগড়ায় নামেন। সেখান থেকে শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় যাওয়ার জন্য গাজীপুরের তাকওয়া পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন তাঁরা। বাসটি মাওনা এলাকায় পৌঁছালে চালক-হেলপারসহ অন্য সহযোগীরা ওই নারীকে আটকে রেখে তাঁর স্বামীকে ধাক্কা দিয়ে বাস থেকে ফেলে দেন। পরে বাসটি ঘুরিয়ে চালক বেপরোয়া গতিতে ফের গাজীপুরের দিকে চালাতে থাকেন। ওই সময় চলন্ত বাসে চালক, হেলপারসহ অন্য সহযোগীরা ওই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে ওই নারীর ব্যাগ ও টাকা রেখে দিয়ে হোতাপাড়ায় একটি নির্জন স্থানে তাঁকে ফেলে রেখে বাসটি নিয়ে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় ওই নারীর স্বামী শ্রীপুর থানায় মামলা করার পরপরই পুলিশের একাধিক দল বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। একই সঙ্গে লুণ্ঠিত ব্যাগসহ টাকা উদ্ধার করা হয়। ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
প্রায় প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। ছোট শিশুরাও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। কঠোর আইন থাকলেও মামলা করা থেকে শুরু করে তদন্ত, সাক্ষ্য-প্রমাণ, বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা ইত্যাদি কারণে মামলাগুলো বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। কাজেই আইনের সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। সব ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে।