বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কাছ থেকে তারা স্বাক্ষরহীন, ভুয়া ভাউচার বা এনক্যাশমেন্ট স্লিপ দিয়ে বিদেশি মুদ্রা কিনে নিত। ক্রয়কারী ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জারগুলো তাদের মূল হিসাবে বা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত অ্যাকাউন্টে সেসব ক্রয় দেখাত না।
ফলে কেন্দ্রীয় রিজার্ভে এসব অর্থ যোগ হতো না।
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতি বা রিজার্ভের পরিমাণ অনেক কমে গেছে। নানা ধরনের সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তার পরও মুদ্রাপাচার থামানো যাচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) ২০২১ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের ছয় বছরে দেশ থেকে বাংলাদেশি মুদ্রায় চার লাখ ৬১ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা পাচার হয়েছে।
অর্থাৎ বছরে পাচার হয়েছে গড়ে ৭৭ হাজার কোটি টাকা। মুদ্রাপাচারের আগের জানা উপায়গুলোর সঙ্গে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন উপায়।
মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহার করেও মুদ্রাপাচার হচ্ছে। ব্যাংকিং বা অনুমোদিত আর্থিক চ্যানেলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাও যদি এভাবে বৈদেশিক মুদ্রার কালোবাজারিতে জড়িত হয়ে পড়ে তার ফলাফল কী হবে?
ডিজিটাল ব্যাংকিং বা পেমেন্টের অন্যান্য সুবিধাও মুদ্রাপাচারে কাজে লাগানো হচ্ছে। আছে অবৈধ অনলাইন গ্যাম্বলিং, গেমিং, বেটিং, ফরেক্স এবং ক্রিপ্টো ট্রেডিং ইত্যাদি। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ বাড়ছে।
মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই বাড়িঘর কেনা হচ্ছে। বিভিন্ন সময় পানামা পেপারস, প্যারাডাইস পেপারস ও প্যান্ডোরা পেপারসেও অনেক অর্থপাচারকারী বাংলাদেশির নাম এসেছে।
টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে মুদ্রাপাচার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। দুদকের এ ধরনের অভিযান আরো বাড়াতে হবে। মুদ্রাপাচার রোধের দায়িত্বে নিয়োজিত অন্য সংস্থাগুলোকেও আরো তৎপর হতে হবে।