ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) খানা জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। জরিপের তথ্য অনুযায়ী, জরিপের অধীন ১৭টি সেবা খাতের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত তিনটি খাত হচ্ছে পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ গড় ঘুষ গ্রহণকারী হচ্ছে বিচারিক সেবা, ভূমি ও ব্যাংকিং খাত।
গণমাধ্যমে প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের বহুবিধ দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হচ্ছে।
সেবা খাতের তো কথাই নেই। কারাগারে আটক স্বজনকে দেখতে গেলেও ঘুষ দিতে হয়। মামলায় শত শত আসামি করে চলে ঘুষ বাণিজ্য। গরিব মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে কিছু জরুরি পণ্য দিতে এক কোটি মানুষকে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হয়েছে।অভিযোগ আছে, সেখানেও কার্ড পাওয়ার জন্য ঘুষ দিতে হয়েছে। ঘুষের বিনিময়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের কার্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘সেবা খাতে দুর্নীতি : জাতীয় খানা জরিপ ২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। দেশের আট বিভাগের ১৫ হাজার ৫১৫টি পরিবারের তথ্য এই জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ১৩ মে থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত এই জরিপ চালানো হয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, পাসপোর্ট সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার ৮৬ শতাংশ সেবাগ্রহীতা এবং ঘুষ দিতে হয়েছে ৭৪.৮ শতাংশের। বিআরটিএতে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার ৮৬ শতাংশ আর প্রতিষ্ঠানটিতে ঘুষ দিতে হয়েছে ৭১ শতাংশ সেবাগ্রহীতাকে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কাছে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার ৭৪.৫ শতাংশ, ঘুষ দিতে হয়েছে ৫৮.৩ শতাংশ সেবাগ্রহীতাকে। বিচারিক সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার ৬২.৩ শতাংশ, ঘুষের শিকার ৩৪.১ শতাংশ। ভূমিসেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার ৫১ শতাংশ, ঘুষ দিতে হয়েছে ৩২.৩ শতাংশকে।দেশে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তৈরি করা হয়েছিল ঘুষ-দুর্নীতি কমানোর জন্য। সেই দুদক আজ একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আয়ের সঙ্গে সংগতিহীন সম্পদ অর্জন নিয়ে প্রায় কোনো পদক্ষেপই নেই। ফলে যে যেভাবে পারছে দুর্নীতি করছে এবং সম্পদ অর্জন করছে। এ ক্ষেত্রে অতীতের সরকারগুলোর ব্যর্থতা সীমাহীন। টিআইবির পাশাপাশি আমরাও আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার এ ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।