গত কয়েক দিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মানুষ কতটা জঘন্য হলে এমন কাজ করতে পারে, ভাবতেও কষ্ট হয়। সমাজে অপরাধপ্রবণতা বেড়ে গেছে। কোনোভাবেই সমাজকে এ থেকে মুক্ত করা যাচ্ছে না। সম্প্রতি রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় দিনের বেলা ঘোষণা দিয়ে একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
আগের রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে পরদিন সকালে পুলিশের সামনেই রড-সিমেন্টের এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হত্যার দৃশ্য ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ করেন হত্যাকারীর মেয়ে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম হান্নান ওরফে জাপানি হান্নান এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের স্বঘোষিত নেতা। ঘটনার পর পুলিশ তাঁকেসহ আরো সাতজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। আদালত আমিনুল ইসলাম হান্নানের চার দিন এবং অপর সাতজনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গ্রেপ্তারের পর এই আমিনুল ইসলাম হান্নান ওরফে জাপানি হান্নানের নানা কুকীর্তির কথা জানা যাচ্ছে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে এত দিন মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন তিনি।
রাজনৈতিক কোনো পদ-পদবি না থাকলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে চলতেন। লাইসেন্স করা একটি শটগান ও একটি পিস্তলসহ সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে চলাফেরা করতেন। এলাকায় বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ ও স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদকের কারবারসহ নানা অপকর্মে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগও আছে। এলাকার ময়লার বাণিজ্যও ১০ বছর ধরে তাঁর নিয়ন্ত্রণে।
এদিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় পদ্মার চরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একজনকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ শহরের উত্তর ইসলামপুরে গত বুধবার রাতে দুই কিশোর গ্যাংয়ের দ্বন্দ্ব মেটাতে বসা সালিসে ছুরি মেরে প্রতিপক্ষের তিনজনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট হচ্ছে যে নির্মমতা-নৃশংসতা দিন দিন বাড়ছে। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করা যায় না বলেই আমাদের সমাজে অপরাধ এক ভয়ানক রূপ নিচ্ছে।
জঘন্য অপরাধীরা সমাজকে কলুষিত করছে। মানুষের মানবতাবোধকেও লাঞ্ছিত করছে। আমরা চাই, দ্রুততম সময়ে এসব নৃশংসতার বিচার সম্পন্ন হোক এবং অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাক।