আকাশপথ ছিল সম্ভাবনার, তা আজ দুর্ভাগ্যের প্রতীক। বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলো একের পর এক ক্ষতির খাতে গড়িয়ে পড়ছে, কেউ কেউ তো অস্তিত্ব সংকটে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ‘ঝুঁকিতে এয়ারলাইনসের বিনিয়োগ’ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, এই খাতে বিনিয়োগ মানে এখন শুধুই অনিশ্চয়তা আর হাহাকার।
একের পর এক ‘দেউলিয়া’র খাতায় নাম লেখাচ্ছে এয়ারলাইনসের সংস্থাগুলো।
এই সংকটের পেছনে শুধু বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপ নয়, রয়েছে নীতিনির্ধারণী দুর্বলতা, সমন্বয়ের অভাব এবং সরকারি পর্যায়ের অদক্ষতা। বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলো বারবার অভিযোগ করেছে, নীতিগত সহায়তা না পাওয়ায় তারা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে। বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অনুমোদনপ্রক্রিয়ার জটিলতা, রুট বরাদ্দে স্বচ্ছতার অভাব এবং জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা এই খাতকে আরো দুর্বল করে তুলেছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে আকাশপথের পরিবহন শুধু বিলাসিতা নয়, এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রবাসী কর্মসংস্থান—সব কিছুই এই খাতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
এয়ারলাইনস খাতের পতন মানে দেশের অর্থনীতিতে এক ভয়াবহ ধস।
সরকারের উচিত অবিলম্বে এই খাতের সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। নীতিগত সহায়তা, রুট বরাদ্দে স্বচ্ছতা, জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোকে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করতে হবে।
আকাশে উড়তে চাওয়া এই খাত ডানা মেলে উড়ুক, ডানা ভেঙে পড়লে আমাদের আকাশপথের ভবিষ্যত্ কেবল স্মৃতি। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে এয়ারলাইনস খাতের পুনরুজ্জীবন এখন সময়ের দাবি।