English

24 C
Dhaka
শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

আরো দৃষ্টান্ত স্থাপিত হোক: মৈত্রী পাইপলাইন উদ্বোধন

- Advertisements -
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক অগ্রগতি সূচিত হয়েছে গত শনিবার। এদিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন’ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পরপরই আসামের নুমালিগড় থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুরের ডিপোতে ডিজেল আসা শুরু হয়েছে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশ বছরে প্রায় ১০ লাখ টন তেল আমদানি করতে পারবে। এতে সড়ক বা রেলপথে তেল পরিবহনে যে বিপুল ব্যয় ও সময়ের প্রয়োজন হয়, তা সাশ্রয় হবে। ফলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলায় ডিজেলের স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশই কিভাবে উপকৃত হতে পারে, একের পর এক তারই নজির সৃষ্টি হচ্ছে।রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার ওপর পাশ্চাত্যের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। অনেক দেশই প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেল সংগ্রহ করতে পারছে না। বাংলাদেশে প্রতিবছর ৭০ থেকে ৭২ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ডিজেলেরই চাহিদা রয়েছে ৪৮ থেকে ৪৯ লাখ মেট্রিক টন, যার ৮০ শতাংশই সরকারকে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই পরিমাণ জ্বালানি তেল আমদানি করা রীতিমতো দুরূহ হয়ে উঠেছে।
Advertisements

তদুপরি আমদানি করা তেল পরিবহনে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। সময়ও লাগছে অনেক বেশি। এমন পরিস্থিতিতে কম খরচে নতুন উৎস থেকে ডিজেল আমদানির পথ খুঁজছিল সরকার। ভারত থেকে পাইপলাইনে ডিজেল আমদানি সেই বিকল্প উৎস হিসেবেই কাজ করবে। আগে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আসত মূলত রেলপথে। বছরে আমদানি করা তেলের পরিমাণ ছিল ৬০ থেকে ৮০ হাজার টন, যা আমাদের জ্বালানি চাহিদায় বিশেষ কোনো ভূমিকাই রাখত না। আবার জাহাজে আসা তেল চট্টগ্রাম বা মোংলা থেকে সড়ক বা নদীপথে উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত নিয়ে যেতেও অনেক সময় ও অর্থের প্রয়োজন হতো। এখন তা অনেক সাশ্রয়ী হবে।

উভয় দেশ শুধু নয়, নেপাল, ভুটানসহ উপ-আঞ্চলিক সমৃদ্ধির জন্যও পারস্পরিক সহযোগিতা একান্তভাবে প্রয়োজন। বাংলাদেশ ভারত থেকে বর্তমানে এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে। ভারতের ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া চলছে।

অন্যদিকে সমুদ্রসংযোগহীন দেশ দুটি ভারতীয় ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারে আগ্রহী। ভারত বাংলাদেশে ট্রানজিট সুবিধা পাচ্ছে। উপ-আঞ্চলিক জোট বিবিআইএনভুক্ত চারটি দেশই অদূর ভবিষ্যতে উন্নততর কানেক্টিভিটির আওতায় আসবে, এমনটিই আশা করা হচ্ছে। এতে সব কটি দেশই ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। বর্তমান যুগে একা চলার কিংবা দ্বার রুদ্ধ করে বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই।

আমরা আশা করি মৈত্রী পাইপলাইনের মতো অদূর ভবিষ্যতে আরো অনেক দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে। কানেক্টিভিটির প্রতিটি স্তম্ভ ক্রমান্বয়ে আরো শক্তিশালী হবে। উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা আরো বাড়াতে দেশগুলোর মধ্যে থাকা সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করতে হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন