পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পাহাড়-টিলাকে নিজ বৈশিষ্ট্যে টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি। দেশের প্রাকৃতিক ঐতিহ্য এবং পর্যটনশিল্পের বিকাশের জন্যও পাহাড় রক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে হচ্ছে উল্টোটা। সারা দেশেই পাহাড়-টিলা ধ্বংসের প্রতিযোগিতা চলছে।
পাহাড় কেটে তার মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায় কিংবা জলাভূমি ভরাট করার জন্য। গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে প্রতিবছর শত শত কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য হচ্ছে। গড়ে উঠেছে নানা ধরনের সিন্ডিকেট।
অথচ অভিযোগ আছে যে পরিবেশ অধিদপ্তরকে ‘ম্যানেজ’ না করে একটি টিলাও কাটা হয় না। একই অভিযোগ স্থানীয় ভূমি অফিসের বিরুদ্ধেও। অভিযোগ আছে, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় অনেক প্রভাবশালী এই পাহাড় ধ্বংসের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত কিংবা নিয়মিত বখরা পেয়ে থাকেন।গণমাধ্যমের খবরাখবর থেকে জানা যায়, গত দুই যুগে বৃহত্তর সিলেটের ৩০ শতাংশ পাহাড়-টিলা কেটে সাফ করে দেওয়া হয়েছে।
সারা দিন তো কাটা হয়ই, অনেক জায়গায় রাতেও বাতি জ্বালিয়ে পাহাড় কাটা হয়। পরিবেশবাদীরা আশঙ্কা করছেন, এভাবে পাহাড় কাটা চলতে থাকলে কয়েক দশকের মধ্যে বৃহত্তর সিলেটে টিলার কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী পাহাড় বা টিলা কাটা নিষিদ্ধ, সেটি সরকারি হোক বা ব্যক্তিমালিকানাধীন হোক। ২০১০ সালে আইনটি সংশোধন করে আরো কঠোর করা হয়েছে। কিন্তু তাতে লাভ কী, যদি আইনের প্রয়োগ না থাকে।
আমরা চাই, পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হোক। আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা হোক। পাশাপাশি পাহাড় সংরক্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার জবাবদিহিও বাড়াতে হবে।