English

22 C
Dhaka
রবিবার, মার্চ ২৩, ২০২৫
- Advertisement -

অর্থনীতিতে আরো গতি আসুক: যমুনা রেল সেতুর উদ্বোধন

- Advertisements -

যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নের সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। একসময় দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ছিল সবচেয়ে অনুন্নত। ফেরিতে যমুনা নদী পার হতে ১০-১২ ঘণ্টাও লেগে যেত। শুষ্ক মৌসুমে ফেরি আটকে যেত চরে।

ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হতো। মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠত। জরুরি পণ্য পরিবহন ব্যাহত হতো ব্যাপকভাবে। কিন্তু যমুনা সেতু নির্মাণের পর যমুনা পার হতে লাগে কয়েক মিনিট।
ঢাকা থেকে দিনের মধ্যে উত্তরাঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামেও পৌঁছানো যায়। পণ্য পরিবহন বহুগুণে বেড়েছে। কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ফসলের ভালো মূল্য পাচ্ছেন। মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
যমুনা সেতুতে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা থাকলেও তা ছিল সমস্যাগ্রস্ত। সে কারণে রেলযোগাযোগকে গতিশীল করতে তৈরি হয়েছে আলাদা রেল সেতু। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মঙ্গলবার উদ্বোধন করা হয়েছে দেশের বৃহত্তম যমুনা রেল সেতুর। ফলে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থায় সম্ভাবনার এক নতুন দুয়ার উন্মোচিত হলো।
সড়কপথের তুলনায় রেলপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন অনেক বেশি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব।তাই সারা দুনিয়ায় নতুন করে রেলপথের প্রসার ঘটছে। বাংলাদেশও সে পথেই হাঁটছে। তা ছাড়া বাংলাদেশের মতো বন্যাপ্রবণ এলাকায় সড়কপথের রক্ষণাবেক্ষণ খরচও অনেক বেশি।

সেই বিবেচনায়ও রেলপথের প্রসার আমাদের জন্য লাভজনক। পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগের মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের রেলযোগাযোগ অনেক সহজ হয়েছে। এবার যমুনা সেতু উত্তরাঞ্চলের রেলযোগাযোগকে আরো অনেক সহজ করেছে। যমুনা রেল সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেল সেতু প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২৭.৬০ শতাংশ অর্থায়ন করা হয়েছে দেশীয় উৎস থেকে আর ৭২.৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। জাপানি পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে।

জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপিন্স ও বাংলাদেশের সাত হাজারেরও বেশি কর্মীর টানা চার বছরের পরিশ্রমে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সেতুটিতে ৫০টি পিলার এবং প্রতি দুই পিলারের মাঝে একটি করে মোট ৪৯টি স্প্যান রয়েছে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার হলেও দুই দিকে ৭.৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রচ এমব্যাংকমেন্ট, লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০.৭৩ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। যমুনা রেল সেতু প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী জানান, সমান্তরাল ডুয়াল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এই সেতুর প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হয়েছে। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।

আমরা আশা করি, যমুনা রেল সেতুর মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অনেক বেশি গতি পাবে এবং ওই অঞ্চলের মানুষও উন্নত সেবা পাবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন