অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, মেসেঞ্জার ইত্যাদি ওটিটির মতো উন্নত প্রযুক্তি এখন দেশে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর পরও কমেনি ভিওআইপির মাধ্যমে সাধারণ ফোনে কল আদান-প্রদান। ফলে বিদেশ থেকে টেলিফোন কল আসা ও যাওয়ার পরিমাণ বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ।
কোনোভাবেই অবৈধ কল রোধ করা যাচ্ছে না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল বা ভিওআইপির চোরাকারবার সরকারের রাজস্ব ফাঁকির অন্যতম মাধ্যম হিসেবে এখনো সচল। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর জালে মাঝেমধ্যে জড়িতদের কেউ কেউ ধরা পড়লেও পুরো কারসাজির নেপথ্যের চক্রকে ধরা যায়নি একবারও।
দেশে বর্তমানে বৈধ পথে আন্তর্জাতিক কল আসছে প্রতিদিন প্রায় দুই কোটি মিনিট। এর মধ্যে ৭০ লাখ থেকে ৮০ লাখ মিনিট কল আসছে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম প্রতিষ্ঠান বিটিসিএলের ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডাব্লিউ) দিয়ে, আর বাকিটা আসছে বেসরকারি আইজিডাব্লিউ অপারেটর ফোরাম (আইওএফ)-এর মাধ্যমে।
অন্যদিকে প্রতিদিন প্রায় তিন কোটি মিনিট কল এখনো ভিওআইপির অবৈধ কারবারিদের মাধ্যমেই আসছে বলে খবরে প্রকাশ। বিটিআরসির তথ্য অনুসারে, ২০১৯ থেকে গত ৩০ জুন পর্যন্ত ৩১টি অপারেশনে অবৈধ ভিওআইপিতে ব্যবহার করা ৫১ হাজার ৩৩১টি সিম উদ্ধার হয়। দুটি কল সেন্টারে ও দুটি ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিফোন সার্ভিস প্রভাইডারস বা আইপিটিএসপিতেও ভিওআইপি সরঞ্জাম মেলে।
বাংলাদেশের টেলিফোন খাতে দুর্নীতি নতুন কিছু নয়। এসব দুর্নীতির নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, ভিওআইপির অবৈধ কারবারিরা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই এসব ব্যবসায়ীকে স্পর্শ করা যায় না।
ভিওআইপির অবৈধ ব্যবসা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতাই হতে পারে বড় সহায়ক শক্তি। কিন্তু সেই আন্তরিকতা আদৌ আছে কি না তা প্রমাণসাপেক্ষ। ভিওআইপির অবৈধ ব্যবসা সবার কাছে ‘ওপেন সিক্রেট’ হলেও এসব অবৈধ কারবারির বিরুদ্ধে মামলার সঠিক পরিসংখ্যান নেই বিটিআরসির কাছে। আবার এসব মামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা সহজেই জামিনে বেরিয়ে যাচ্ছে বলেও জানা যায়।
ভিওআইপির অবৈধ কারবার বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের রাজস্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়—এমন যেকোনো কাজই কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।