একটি সমীক্ষার ফলাফলের বরাত দিয়ে গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে সরকারি হাসপাতালে যেখানে সি-সেকশনের মাধ্যমে প্রসব হয়েছে ৩৬ শতাংশ, সেখানে বেসরকারি হাসপাতালে এই হার ছিল ৮৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে (বিডিএইচএস) ২০২২ সমীক্ষার প্রাথমিক ফলাফলে এই তথ্য উঠে এসেছে।
সমীক্ষাটি পরিচালনা করেছে জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট)। সমীক্ষায় বলা হয়, ২০১১ সালে সি-সেকশনের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের হার ছিল ১৮ শতাংশ। ২০১৪ সালে এই হার বেড়ে হয় ২৪ শতাংশ। ২০১৭-১৮ সালে এটা ৩৪ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৪৫ শতাংশ ছিল। এভাবে সি-সেকশনের হার বৃদ্ধির যৌক্তিকতা নিয়ে এখনই সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
সমীক্ষায় স্বাস্থ্য খাতের বেশ কিছু ভালো দিকও উঠে এসেছে। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২২ সালে শিশুমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ধারাবাহিক তিন বছরের গড় অনুযায়ী শিশু জন্মের পর পাঁচ বছরের নিচে মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৪৩ থেকে ৩১-এ নেমে এসেছে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হওয়ার হার ৩১ থেকে ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
কিশোরী বয়সে সন্তান জন্ম দেওয়ার হারও কমেছে। ২০১৭ সালে এই হার ছিল ২৮ শতাংশ। ২০২২ সালে এসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৩ শতাংশে। অল্প বয়সের বিয়েও ধীরে ধীরে কমছে। ১৮ বছরের আগে বিয়ে হয়ে যাওয়ার হার ২০১১ সালে ছিল ৬৫ শতাংশ, ২০১৭ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৫৯ শতাংশ এবং ২০২২ সালে তা ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে।
দেশের স্বাস্থ্য খাতের অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক। তার পরও এ খাতে বিদ্যমান অনিয়ম দূর করতে পরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। অনৈতিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে অপ্রয়োজনীয় সি-সেকশন করার মতো ক্রিয়াকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।