English

29 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৫
- Advertisement -

অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করুন: গভীর সংকটে শিল্প-কারখানা

- Advertisements -
নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেশের শিল্প খাত আজ এক গভীর সংকটে নিমজ্জিত। গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট ক্রমেই প্রবল হচ্ছে। ঢাকার সাভার, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদী এলাকার শিল্প-কারখানাগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস না পাওয়ায় উৎপাদন ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এর ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে আবারও বাড়ানো হয়েছে গ্যাসের দাম, যার কারণে শিল্পে রীতিমতো বিপর্যয় নেমে আসবে বলে জানান খাতসংশ্লিষ্টরা। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, শিল্প গ্রাহকদের প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের বিল ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা এবং ক্যাপটিভ পাওয়ারে (শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র) গ্যাসের দাম ৩১.৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা করা হয়েছে। পুরনো শিল্প-কারখানায় অনুমোদিত লোডের বাইরে অতিরিক্ত ব্যবহারে দিতে হবে বাড়তি দাম।
খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা, বাজার অস্থিতিশীলতা, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহার, ঋণপত্র খোলার অভাবে কাঁচামালের অপর্যাপ্ততা, শ্রমিক অসন্তোষ ও উৎপাদন অপ্রতুলতায় দুই শতাধিক কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।
যেগুলো টিকে আছে সেগুলোও অস্তিত্বের সংকটে ধুঁকছে। এ অবস্থায় নতুন করে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে শিল্প খাতকে আরো ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার গ্যাসের দাম বাড়ালেও সরবরাহ তেমন বাড়াতে পারবে না। কারণ ধারাবাহিকভাবে দেশীয় কূপগুলো থেকে গ্যাসের উৎপাদন কমে আসছে।
আর তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) থেকে সর্বোচ্চ আমদানির সক্ষমতা ১১০০ মিলিয়ন ঘনফুট। নতুন এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ না হলে আমদানি আর বাড়ানো যাবে না। আগামী দুই বছরেও নতুন টার্মিনাল চালুর তেমন সম্ভাবনা নেই। কারণ টার্মিনাল নির্মাণে কোনো চুক্তি হয়নি। আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া দুটি চুক্তিই বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বাংলাদেশ নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার ধারণা, নতুন শিল্পের জন্য এত উচ্চমূল্যের গ্যাস বিল দিয়ে কেউ এই খাতে বিনিয়োগ করবে না। পাশাপাশি আমরা যারা কারখানা চালাচ্ছি, তারাও সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে উদ্যোগী হব না।’ তিনি আরো বলেন, ‘গ্যাসের দাম বাড়ানো হলেও গ্যাসের সরবরাহ কিন্তু বাড়ানো হচ্ছে না।’ পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা রয়েছে প্রায় চার হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট।

গত রবিবার গ্যাস সরবরাহ করা হয় দুই হাজার ৬৯৬ মিলিয়ন ঘনফুট, ঘাটতি ছিল প্রায় দেড় হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। মোট দুই হাজার ৬৯৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের মধ্যে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে এক হাজার ৮৭৩ মিলিয়ন ঘনফুট এবং আমদানী তরা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) থেকে ৮২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়।

দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কর্মসংস্থানের জন্য দেশে দ্রুত শিল্পায়ন প্রয়োজন, কিন্তু হচ্ছে উল্টোটা। বিদ্যমান শিল্পগুলোও ধুঁকতে ধুঁকতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে এ দেশের দ্রুত বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার কর্মসংস্থান হবে কিভাবে?

আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির স্বার্থে শিল্প সুরক্ষায় গুরুত্ব দেবে। গ্যাসের দাম বাস্তবতার নিরিখে বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি শিল্প-কারখানার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন