দিনে দিনে কি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে ঢাকা? বিশ্বের ৬০টি শহরের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট সম্প্রতি যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হচ্ছে বিশ্বে নিরাপদ শহরের তালিকায় রাজধানী ঢাকার অবস্থান ৫৪তম। তাদের তৈরি সূচক অনুযায়ী ১০০ পয়েন্টের মধ্যে সব সূচকের গড় মিলিয়ে ঢাকা পেয়েছে ৪৮.৯০ পয়েন্ট।
এর মধ্যে ঢাকা স্বাস্থ্য নিরাপত্তার সূচকে পেয়েছে ৫০.৯০, অবকাঠামোতে ৪৯.৬০, ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় ৪৬.৬০ ও পরিবেশগত নিরাপত্তায় ৫৮.২০ পয়েন্ট। অন্য সূচকের তুলনায় ডিজিটাল নিরাপত্তায় ঢাকার সূচক সবচেয়ে কম।
এতে পেয়েছে মাত্র ৩৯ পয়েন্ট। ডিজিটাল নিরাপত্তায় ৬০ দেশের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ৫৬তম। ডিজিটাল নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, অবকাঠামো, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও পরিবেশগত নিরাপত্তা বিবেচনা করে এই সূচক নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালে প্রকাশিত নিরাপদ শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ছিল ৫৮তম। ২০১৯ সালের সূচকে অবস্থান দাঁড়ায় ৫৬তম। সেই দিক থেকে প্রতিবার ধারাবাহিকভাবে দুই ধাপ করে এগিয়েছে ঢাকা মহানগরী। কিন্তু এই অগ্রগতি একেবারেই আশাব্যঞ্জক নয়।
রাজধানী ঢাকায় বুকভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো স্থান একেবারে নেই বললেই চলে। রাস্তার দুঃসহ যানজট। একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মাটির স্তূপ ফুটপাতে এমনভাবে রাখা হয়েছে, বিপরীতমুখী দুজন মানুষ হেঁটে পার হতে গেলেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আর এভাবেই রাজধানী বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে দিনের পর দিন।
পরিবেশদূষণে রাজধানী এখন অতীতের যেকোনো রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শব্দদূষণ। ঢাকা শহর ময়লা-আবর্জনা, ধুলাবালিতে ডুবে আছে। এখন আর এই ধুলাবালি, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। পরিবেশদূষণের কারণে সংক্রামক রোগের হার বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
ঢাকার এই অবস্থা এক দিনে হয়নি। বহু আগে থেকেই পরিকল্পনাহীনভাবে বেড়েছে ঢাকা শহর। বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীর ৬০ শতাংশ আবাসনই গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে।
কিন্তু এখনো ঢাকাকে তিলোত্তমা করে গড়ে তোলা সম্ভব। একটি বড় পরিকল্পনা নিয়ে এই কাজটি করতে হবে। সেই সঙ্গে নাগরিকদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে।