English

25 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

অনলাইন প্রতারণা ও মুদ্রাপাচার: নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ব্যবস্থা নিন

- Advertisements -

আধুনিক বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ডিজিটাল প্রযুক্তি ক্রমে জনপ্রিয় হচ্ছে। এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণের কারণে মানুষের জীবনযাত্রায়ও যোগ হচ্ছে নতুন নতুন মাত্রা। কোনো পণ্য কেনার জন্য মানুষ এখন দোকানে দোকানে কমই ঘুরে বেড়ায়। তার পরিবর্তে পছন্দের পণ্যটি ঘরে বসেই অনলাইনে খুঁজে দেখে ও কিনে নেয়। এভাবে প্রতিনিয়ত বাড়ছে অনলাইনে কেনাকাটার পরিমাণ। আর এই সুযোগে অনলাইনে প্রতারণার পরিমাণও বাড়ছে। প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। প্রতারকরা হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। সেসব টাকা আবার বিদেশে পাচারও হয়ে যাচ্ছে। এমনই ভয়ংকর তথ্য উঠে এসেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা শাখাসহ (সিআইসি) বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ নজরদারিতে। গত ছয় মাসে তারা ৫৪টি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করেছে, যেগুলো ৬০ লাখের বেশি গ্রাহকের কাছ থেকে ১৭ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পাচার করেছে।

অনলাইন প্রতারণা নিয়ন্ত্রণে আইনের যেমন ঘাটতি রয়েছে, তেমনি রয়েছে আইন বাস্তবায়নের দুর্বলতা। এমন অনেক অনলাইন প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যাদের না আছে নিবন্ধন, না আছে দেশের কোথাও কোনো অফিস। অনেকে যে ফোন বা সিম ব্যবহার করে সেগুলোও ভুয়া। তাই প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ ফিরিয়ে নেওয়াও গ্রাহকের পক্ষে সম্ভব হয় না। এমনকি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোর পক্ষেও তাদের ধরা খুব সহজ হয় না। অথচ এ রকম শত শত প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা আড়ালে থেকে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রতারণার জাল বিস্তার করে এবং গ্রাহকদের সর্বস্বান্ত করে। সিআইসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইউজেএসটি সার্ভিসেস নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রায় দুই লাখ গ্রাহক সংগ্রহ করে এক হাজার ২৫৫ কোটি টাকা প্রতারণা করে নিয়েছে।

ইয়ং লিং কর্টিজেস নামের প্রতিষ্ঠান তিন লাখ ১০ হাজার গ্রাহক সংগ্রহ করে ৩০০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা হাতিয়েছে। এভাবে ৫৪টি প্রতিষ্ঠান ৬০ লাখের বেশি গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতারণা করে ১৭ হাজার কোটি টাকার বেশি পাচার করেছে। প্রতারণার জন্য এরা নানা ধরনের কৌশল ব্যবহার করে মানুষকে প্রলুব্ধ করে। তার মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট ও বোনাসের প্রলোভন এবং সদস্য দিয়ে সদস্য সংগ্রহের কৌশল। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান মানুষের আস্থা অর্জনের জন্য প্রচুর অর্থের বিনিময়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিদের নানাভাবে ব্যবহার করে। আর প্রতারণার কথা না জেনেই তাঁরা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে কাজ করেন।

দেশে যেহেতু ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে, তাই এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজটিও দ্রুত এগিয়ে নিতে হবে। শুধু অনলাইন প্রতিষ্ঠানের প্রতারণাই নয়, দ্রুত বাড়ছে ফেসবুক, ইউটিউব, বিগো, লাইকি, পাবজি, টিকটকের মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সংঘটিত প্রতারণা ও অপরাধ। বাড়ছে হুন্ডি, ক্রেডিট কার্ড সুবিধার অপব্যবহারসহ নানা উপায়ে মুদ্রাপাচারের পরিমাণ। তাই প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নসহ দ্রুত এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিতে হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন