সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের প্রতিদিনের সঙ্গী। পছন্দের ছবি, ভিডিও থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে মন্তব্য এখানে তুলে ধরা যায়। সেই মন্তব্য বা ছবির ওপর নানা জনের মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীকে উদ্বুদ্ধ করে। আজকাল কনটেন্ট, লাইক, কমেন্ট ইত্যাদি শব্দ প্রায় সবার মুখে মুখে।
কার কনটেন্টে কী পরিমাণ লাইক কিংবা কমেন্ট হলো, এ নিয়েও ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। ফলে নিত্যনতুন কনটেন্ট আসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন এক নেশার নাম। আবার এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহৃত হচ্ছে দেশ, সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজেও। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে। অপরাধীরা বিভিন্ন সূত্র ব্যবহার করে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রবিরোধী প্রচার-প্রচারণা, গুজব, ধর্মীয় উসকানি, এমনকি যৌন হয়রানির মতো ঘটনাও ঘটছে এখানে।
এককথায় অপরাধী পেয়েছে ক্রসবর্ডার অপরাধের সুযোগ, শুধু এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণেই। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কোনো জবাবদিহি না থাকায় অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পরও হচ্ছে না সুরাহা। দেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের সব ক্ষমতা নেই।
বিটিআরসি শুধু ইউটিউব, ফেসবুককে কোনো কনটেন্ট সরানোর অনুরোধ করতে পারে। সেই কনটেন্ট তাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড পরিপন্থী হলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তা অপসারণ করে, নয়তো করে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী বা সরকারের পক্ষে ইন্টারনেট জগতে কোনো কিছু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। আর এই সুযোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার হচ্ছে। আপত্তিকর কনটেন্ট, ভিডিওর ফলে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর বাইরে আছে হ্যাক হওয়ার আশঙ্কাও।
সিকিউরিটি আপডেটে জটিলতা দেখা দিয়েছে। ফলে বেহাত হতে পারে গ্রাহকের গোপন তথ্য। প্ল্যাটফর্মটি নতুন করে সুরক্ষার বিষয় যোগ করলেও এমন কিছু বিষয় লুকানো আছে যেগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের স্বেচ্ছাচারী ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সরকারের আইন প্রণয়ন করা দরকার। মাঝেমধ্যেই শোনা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাগাম টানতে যাচ্ছে সরকার। দ্রুত আইন করে সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করুন।