English

26 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে: ওষুধের দাম নিয়ে নৈরাজ্য

- Advertisements -

দেশের ওষুধের বাজারে এক ধরনের নৈরাজ্য চলছে। এখানে ওষুধ প্রশাসনের কার্যত কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই। ফলে বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ওষুধের দাম। তারপর বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো লোভনীয় ‘অফার’ দিয়ে চিকিৎসকদের মাধ্যমে সেসব ওষুধ রোগীদের প্রেসক্রিপশনে যোগ করাচ্ছে।

এক শ্রেণির চিকিৎসক সেসব অফারে সাড়াও দিচ্ছেন। আর দরিদ্র রোগীরা নিজেদের সহায়-সম্বল বিক্রি করে সেসব ওষুধ কিনতে বাধ্য হচ্ছে। অনেক রোগী ওষুধ কিনতে না পারায় প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারাও যাচ্ছে।
বাংলাদেশে ওষুধ শিল্প সমিতি সূত্র অনুযায়ী বর্তমানে ২১৪টি কম্পানি ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন করছে। কম্পানিগুলো দেড় হাজার রাসায়নিক ধরনের বা জেনেরিক নামের ওষুধ তৈরি করে, যেগুলো প্রায় ৩১ হাজার ব্র্যান্ড নামে বিপণন করা হয়। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় তালিকাভুক্ত ১১৭টি জেনেরিক নামের ওষুধের দাম ওষুধ প্রশাসন নির্ধারণ করে। বাকি ওষুধগুলোর দাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোই নির্ধারণ করে। দাম নির্ধারণ করে তারা শুধু সরকারকে দেখিয়ে নেয়। এ ক্ষেত্রে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ন্যূনতম যৌক্তিক অবস্থানে রাখার চেষ্টাও খুব একটা দৃশ্যমান নয়। দেখা যায়, একই জেনেরিকের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওষুধের দামের মধ্যেও আকাশ-পাতাল পার্থক্য থাকে। কেন এত পার্থক্য থাকবে? আলাদা কম্পানির ওষুধের মানেও কি পার্থক্য আছে? মানে পার্থক্য থাকলে সেই ওষুধ তো বাজারে আসাই উচিত নয়। আর শুধু কম্পানিগুলোই যে দাম বাড়াচ্ছে তা নয়। কম্পানিগুলোর প্রস্তাবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার তালিকায় থাকা ওষুধগুলোর দামও বাড়াচ্ছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, গত ৩০ জুন তালিকাভুক্ত ২০টি জেনেরিকের ৫৩টি ব্র্যান্ডের ওষুধের দাম বাড়ানো হয়। কোনো কোনোটি শতভাগ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এর সাড়ে চার মাস পরই গত রবিবার লিবরা ইনফিউশন লিমিটেডের ছয়টি জেনেরিকের ২৩টি ওষুধেরও দাম বাড়ানো হয়েছে।
একবেলা না খেয়ে থাকা যায়। মাছ-মাংস বাদ দিয়ে শুধু শাক-শুঁটকি খেয়েও থাকা যায়। কিন্তু সন্তান বা পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে তাকে ওষুধ না দিয়ে কি থাকা যায়? মানুষ তাই শেষ সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী রোগীর ওষুধ জোগাতে। আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগানো হয় কিছু প্রতিষ্ঠানের মুনাফার অঙ্ক স্ফীত করার জন্য। কিন্তু ভোক্তার স্বার্থ দেখার দায়িত্ব তো সরকারের। সরকার এ ক্ষেত্রে কী করছে? সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে থাকা সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এ ক্ষেত্রে কি দায়িত্ব পালন করছে—তার জবাবদিহি কোথায়? বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাজারে সব ওষুধের মান কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রেসক্রিপশনে ব্র্যান্ড নাম না লিখে জেনেরিক নাম লিখতে হবে। তা করা গেলেই ওষুধের দামের নৈরাজ্য অনেকাংশে কমে আসবে। তদুপরি দাম নির্ধারণে সরকারের নিয়ন্ত্রণ রাখতেই হবে।
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন