English

22 C
Dhaka
রবিবার, জানুয়ারি ১২, ২০২৫
- Advertisement -

মাটি কাটা বন্ধ করুন: হারিয়ে যাচ্ছে লালমাই পাহাড়

- Advertisements -
বাংলাদেশে প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্বসম্পন্ন অঞ্চলগুলোর অন্যতম কুমিল্লার ময়নামতি-লালমাই পাহাড়। শুধু দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই নয়, স্থানটির প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্বও অপরিসীম। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, এখানকার লাল মাটির ইতিহাস অনেক পুরনো, কোটি বছর আগের প্লাইস্টোসিন যুগের। ১৯৮৯ ও ১৯৯১ সালের প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানেও ১১টি প্রাগৈতিহাসিক প্রত্নক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে।
এর আগে এবং পরেও আরো অনেক প্রত্নক্ষেত্র ও নিদর্শন পাওয়া গেছে। আট কিলোমিটার দীর্ঘ এবং প্রায় পাঁচ কিলোমিটার চওড়া বিচ্ছিন্ন এই পাহাড়ি অঞ্চলটি আজ ধ্বংসের মুখোমুখি। দিনরাত খননযন্ত্র দিয়ে পাহাড়ের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে লোভী মানুষ।
পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রশাসন পাহাড় কাটা ঠেকাতে প্রায় সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ।
আইনের প্রয়োগ নেই। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞাও কাজে আসছে না। এ নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতেও উঠে এসেছে অবাধে পাহাড় কাটার চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরেই লালমাই পাহাড় ধ্বংসের রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে। অনেক পাহাড় ও টিলা রীতিমতো সমতল করে ফেলা হয়েছে। পাহাড় কেটে সেই জায়গায় পুকুরও বানানো হয়েছে। এমন ধ্বংসযজ্ঞের প্রেক্ষাপটে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে লালমাই পাহাড় রক্ষায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি জনস্বার্থে একটি রিট আবেদন করে এবং তার রায়ে হাইকোর্ট অবিলম্বে পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দেন।
প্রতিবেদক সরেজমিন পরিদর্শনে দেখতে পান, পাহাড়ের বড় ধর্মপুর মধ্যপাড়া এলাকায় কম্পানিবাড়ির পশ্চিম পাশে অবাধে  পাহাড় ও টিলার মাটি কাটা হচ্ছে।
ওই এলাকায় বেশির ভাগ পাহাড় ও টিলা সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে।
১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী দেশে সরকারি বা ব্যক্তিগত সব ধরনের পাহাড় বা টিলা কাটা নিষিদ্ধ। ২০১০ সালে আইনটি সংশোধন করে আরো কঠোর করা হয়েছে। কিন্তু লাভ কী, যদি আইনের প্রয়োগ না থাকে।
অভিযোগ আছে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের গাফিলতি এবং পাহাড়ের ‘মাটিখেকোদের’ বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
পরিবেশবিদদের ধারণা, এভাবে চলতে থাকলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে লালমাই পাহাড়ের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।
বড় বড় খননযন্ত্র দিয়ে পাহাড় কাটা হয়, শত শত ট্রাকে সেই মাটি পরিবহন করা হয়, অথচ প্রশাসন প্রায়ই তা দেখতে পায় না বলেই লালমাইয়ের এমন দুরবস্থা। সে মাটি কারা কাটছে, কোথায় যাচ্ছে, কী করা হচ্ছে—সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। ঐতিহ্যবাহী লালমাই পাহাড় ও তার পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন