English

15 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
- Advertisement -

ব্যবসায়ীদের পরামর্শ নিন: ঘনীভূত হচ্ছে সংকট

- Advertisements -
দেশের অর্থনীতি নানা রকম চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। ছোট-বড় সব ব্যবসার ক্ষেত্রেই নানা ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। শিল্প, ব্যবসা, বিনিয়োগ—সব কিছুই যেন স্বাভাবিক গতি হারিয়ে ফেলছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিরাজ করছে এক ধরনের অস্থিরতা এবং ব্যবসায়ীরা আছেন উদ্বেগের মধ্যে।

প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, শিল্পে নিরাপত্তাহীনতা, সরবরাহব্যবস্থায় সমস্যা, ডলার সংকট, আমদানি-রপ্তানির করুণ দশায় সংকট আরো ঘনীভূত হয়েছে।

কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না মূল্যস্ফীতি। নিত্যপণ্যের বাজারও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি প্রভাব ফেলেছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায়।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, নভেম্বর মাসে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৩.৮০ শতাংশ, যেখানে অক্টোবরে ছিল ১২.৬৬ শতাংশ। শহরাঞ্চলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪.৬৩ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি কমাতে এরই মধ্যে কয়েকবার নীতি সুদ হারও বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে কি কোনো লাভ হয়েছে? নীতি সুদ হার হ্রাস-বৃদ্ধি করে কি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়? যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ উন্নত বিশ্বের সুশৃঙ্খল বাজার ব্যবস্থায় আছে মানসম্পন্ন মূল্য নির্ধারণ (প্রাইসিং) পদ্ধতি।
সেসব দেশেও নীতি সুদ হার প্রয়োগ করে মূল্যস্ফীতি সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু নীতি সুদ হার বাড়ালেই হবে না। সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সচল করতে হবে। উৎপাদন বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে।

তা না হলে মূল্যস্ফীতি কমবে না। বাজার অস্থিতিশীল করছে যে সিন্ডিকেট, সেটি ভাঙতে সরকারকে আরো কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে।

বাজার ব্যবস্থাপনায়ও গলদ রয়েছে। দেশের বাজারগুলোতে কয়েক বছর ধরে লাগামহীনভাবে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। এক বছরের ব্যবধানে মোটা চাল, সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, রসুন, আলু—এই পাঁচ পণ্যের দাম সর্বোচ্চ ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকার পেঁয়াজ, আলু, ভোজ্য তেল, চিনি, চালসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে শুল্ক-কর ছাড় দিলেও আমদানি বাড়েনি, বরং এসব পণ্যের সংকট তৈরি হয়েছে। মূল্যস্ফীতির পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে খাদ্যপণ্যের উৎপাদন ও আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের তিন মাস অতিবাহিত হলেও দেশের অনেক কিছুই এখনো স্বাভাবিক হয়নি। ব্যবসায়ীদের পড়তে হচ্ছে নানা ধরনের সংকটে। পরিবারসহ ব্যাংক হিসাব জব্দ করা, হত্যা মামলা দেওয়া, গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকা, নিরাপত্তা হুমকি, সার্বিক কার্যক্রমে তদারকিসহ বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। শীর্ষ অনেক ব্যবসায়ীকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশের পুরো ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের মাঝে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। উদ্যোক্তা-বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ায় তারা নতুন বিনিয়োগে যাচ্ছেন না। আমদানিতেও বাধা পাচ্ছেন। অনেকে উৎপাদন সক্ষমতাও কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন।

বাজারের প্রধান অংশীজন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এই ব্যবসায়ীদের কি সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে? সংকট উত্তরণে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকার সংলাপ করলেও এখনো ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা করেনি। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করলে সমাধানের পথ সহজ হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা।

ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ব্যবসায়ীদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তাদের আস্থায় আনতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের উচিত বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বসা। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করলে সমাধানের পথ সহজ হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন