অবশেষে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই সিদ্ধান্তটি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হতাশা কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। গত বছরের মার্চ মাস থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের শিক্ষার্থীদের অটো পাস দেওয়া হয়েছে। করোনার কারণে সেই শিক্ষার্থীরা এখন পর্যন্ত কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেননি। অন্যদিকে আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৩০ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। এরপর সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে পরবর্তী দুই সপ্তাহ পর এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠানের কথা ছিল।
এসএসসি ও সমমানের জন্য ৬০ দিন এবং এইচএসসি ও সমমানের জন্য ৮৪ দিনে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছিল। এরপর দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে দুই পরীক্ষাই নেওয়ার কথা ছিল। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি বছর জুনে এসএসসি ও সমমান এবং জুলাই-আগস্টে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। শেষ পর্যন্ত এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে কি না এই অনিশ্চয়তায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে কিছুটা হলেও হতাশার জন্ম নিয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসে শিক্ষামন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন, তাতে কিছুটা হলেও হতাশা কাটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, কভিড-১৯ পরিস্থিতি অনুকূল হলে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে পরীক্ষা নেওয়া হবে। অনুকূল পরিস্থিতিতে এসএসসি ও এইচএসসি উভয় ক্ষেত্রেই গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে সংক্ষিপ্ত পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রতি ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৫০ নম্বর এবং তিন ঘণ্টার পরিবর্তে দেড় ঘণ্টার পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে।
এ ছাড়া একাধিক প্রশ্নের মধ্যে স্বল্পসংখ্যক প্রশ্নের উত্তর শিক্ষার্থীদের দিতে হবে। আর আবশ্যিক বিষয়ে আগের পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেওয়া হবে। আর যদি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে অ্যাসাইনমেন্ট ও সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে অথবা শুধু সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন হতে পারে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিবেচনায় ২০২১ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের জন্য ৬০ কর্মদিবস এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের জন্য ৮৪ কর্মদিবসের যে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে, সেই সিলেবাসের আলোকেই পরীক্ষা নেওয়া হবে। ঈদুল আজহার পর অনলাইনে পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে। পরীক্ষার ফিও নেওয়া হবে অনলাইনে।
করোনা কেটে গিয়ে শিক্ষাঙ্গনে আগের পরিবেশ ফিরবে, আমরা আশাবাদী।